মুফতি ফজলুল হক আমিনী রহ. শুধু একটি নামই নয়, একটি আন্দোলন, ইতিহাসের এক বিশাল পাঠ। ছিলেন এক জনপ্রিয় প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ। যখন রাজনৈতিক সমাবেশে তাঁর নাম ঘোষিত হতো, তখন হাজার জনতার মন আবেগে-উত্তেজনায় দুলে-দুলে উঠতো, তাদের উৎসুক দৃষ্টি অনিমেষ লেগে থাকতো মঞ্চে, ডায়াসে, মুফতি আমিনীর উদয়নের পথে, সমাবেশ জুড়ে প্রথমে নেমে আসতো একটা সুনসান নীরবতা, তারপর বক্তৃতা শুরু হলে সেই নীরবতা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেতো,
মুহূর্তেই নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে সমাবেশস্থল অগ্নিময় হয়ে উঠতো। না, তিনি কোনো লম্বা বক্তৃতা দিতেন না, হাতে-গোনা কয়েকটি বাক্যেই তিনি জনতার বোধ-বিবেকে আগুন জ্বালিয়ে দিতেন। সবাই তখন আবিস্কার করতেন, যেনো প্রত্যেকের ভিতর থেকে ধ্বনিত হচ্ছে- চেতনা এখনো নিভেনি, বিবেক এখনো মরেনি। প্রস্তুত হতেন নিজের জান-মাল দিয়ে দিতে। সমবেত জনতার জাগ্রত চেতনা দেখে আমিনী হুজুরও অনেক উৎসাহিত হতেন। তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধেএক প্রচন্ড অগ্নীগিরী হয়ে উঠতেন, প্রকাশ পেতো মজলুমানের একবিপ্লবী কন্ঠ ও দেশপ্রেমিক ঈমানদার তৌহিদী জনতার কল্যাণকামী এক মহান আপোষহীন নেতার। আপোষহীনতার ফলে জেল জুলুম উপেক্ষাকরে দুর্ভেদ্য প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে জালেম শাহীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাতিলের সামনে দ্বীনে ইসলামের আওয়াজকে উচ্চকিত করতেন, ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতির র্দুদিনে হুংকার দিয়ে গর্জে উঠতেন। সমস্যা সমাধানে শরীয়া ভিত্তিক সমাধান- ফতোয়া দিয়ে আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিতেন। দরবারী মোল্লা ও নাস্তিক্যবাদী আওয়ামী অপশক্তি কর্তৃক ব্যক্তিগত চরিত্রহনন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও পেশিশক্তির ভয়ঙ্কর হুংকার উপেক্ষা করে মুফতি আমিনী রহ. কাফনের কাপড় সাথে নিয়ে আজীবন সংগ্রামকরে গেছেন। নিজের ছেলেকে গুম করার পরেও সেদিন তাগুতের সাথে আপোষ না করে ঘোষণা করেছিলেন, “আমি কোরানের জন্য আমার ছেলেকে ছাড়তে প্রস্তুত।” মহান আল্লাহ’র কাছে ফরিয়াদ করে বলেছিলেন, ‘‘হে আল্লাহ আমি তোমার কুরআন রক্ষার আন্দোলনে নেমেছি তুমি আমার ছেলেকে রক্ষা কর।’’ শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মুফতি আমিনী বলেছিলেন, “আমার ছেলেকে তুমি গুম করিয়েছ। আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি, আল্লাহ শেখ হাসিনার ছেলেকেও তুমি গুম করো।” শাসকগোষ্ঠী শত চেষ্টা করেও মুফতি আমিনীর কন্ঠ স্তব্ধ করকে পারেনি। আপোষহীনতার সাথে সংগ্রাম করে গেছেন তাগুতের বিরুদ্ধে। মুফতি আমিনীর আপোষহীনতার একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত হলো, ১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আমীরে হেফাজতের গাড়ি বহরে ইসলাম বিদ্বেষী সরকারের হামলার পর হাটহাজারী মাদ্রাসায় ওলামা সম্মেলনের আয়োজন করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। মুফতি আমিনী রহ. সহ দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, হুজুরের সাথে আমিও ছিলাম। ওলামা সম্মেলন শুরু হলো, মাইকে আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ’র নাম ঘোষণা হলো, শুনতেই মুফতি আমিনী রহ. বসার স্থান থেকে উঠে গেলেন, আমীরে হেফাজতকে আদবের সাথে বলে মঞ্চ থেকে নেমে যাচ্ছেন, তখন হেফাজত মহাসচিব বললেন, হযরত আপনি কেন চলে যাচ্ছেন? তা মাইকে ঘোষণা দেন, তখন আমিনী রহ. বজ্রকন্ঠে বললেন, “যে মঞ্চে আওয়ামীলীগ উঠে সেই মঞ্চে আমিনী থাকেনা” মুহূর্তেই নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে অগ্নিময় হয়ে উঠে উপস্থিত ওলামায়ে কেরামের কন্ঠ, আমিনী আমিনী শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে হাটহাজারী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের কক্ষ। তাঁর আপোষহীনতার আরেকটি উজ্জল দৃষ্টান্ত হলো। ১১ সালের দিকে বেফাকের কোন এক বৈঠকে মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ আমিনী সাহেব হুজুরকে মুসাফাহার জন্য হাত বাড়িয়ে দিলে, আমিনী সাহেব তাকে উদ্দেশ্য করে বলে ছিলেন, “আমি কোন দরবারী মোল্লা’র সাথে হাত মিলাই না”। এধরণের জানা অজানা আরো অনেক ঘটনা আছে যা থেকে প্রতিয়মান হয় যে, মুফতি আমীনি রহ. ছিলেন, আপোষহীনতার এক আদর্শ উজ্জল নক্ষত্র এবং মূর্তপ্রতিক। যিনি জীবনের শেষ সময়টুকু পর্যন্ত ইসলাম বিদ্বেষী তাগুতি শাসকগোষ্টীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। তাদের সকল অপকর্মের দাতঁভাঙ্গা জবাব দিতে গিয়ে র্দীঘ দিন গৃহবন্দিত্ব বরণ করেন, এবং গৃহবন্দি অবস্থায় ইসলাম বিদ্বেষী সরকারের পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যেই ১২/১২/১২ রাত ১২ টা ২০ মিনিটে শহীদী মৃত্যু লাভ করলেন আল্লামা শহীদ মুফতি ফজলুল হক আমীনি রহ.। তাই নিশ্চিত বলতে পারি, তিনি ছিলেন আপোষহীনতার এক মূর্তপ্রতিক। সত্যের পক্ষে ছিলেন চির অকুতোভয়, সদা নির্ভীক আপোষহীন সংগ্রামী।
মুহূর্তেই নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে সমাবেশস্থল অগ্নিময় হয়ে উঠতো। না, তিনি কোনো লম্বা বক্তৃতা দিতেন না, হাতে-গোনা কয়েকটি বাক্যেই তিনি জনতার বোধ-বিবেকে আগুন জ্বালিয়ে দিতেন। সবাই তখন আবিস্কার করতেন, যেনো প্রত্যেকের ভিতর থেকে ধ্বনিত হচ্ছে- চেতনা এখনো নিভেনি, বিবেক এখনো মরেনি। প্রস্তুত হতেন নিজের জান-মাল দিয়ে দিতে। সমবেত জনতার জাগ্রত চেতনা দেখে আমিনী হুজুরও অনেক উৎসাহিত হতেন। তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধেএক প্রচন্ড অগ্নীগিরী হয়ে উঠতেন, প্রকাশ পেতো মজলুমানের একবিপ্লবী কন্ঠ ও দেশপ্রেমিক ঈমানদার তৌহিদী জনতার কল্যাণকামী এক মহান আপোষহীন নেতার। আপোষহীনতার ফলে জেল জুলুম উপেক্ষাকরে দুর্ভেদ্য প্রাচীর ডিঙ্গিয়ে জালেম শাহীর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাতিলের সামনে দ্বীনে ইসলামের আওয়াজকে উচ্চকিত করতেন, ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতির র্দুদিনে হুংকার দিয়ে গর্জে উঠতেন। সমস্যা সমাধানে শরীয়া ভিত্তিক সমাধান- ফতোয়া দিয়ে আমাদেরকে দিক নির্দেশনা দিতেন। দরবারী মোল্লা ও নাস্তিক্যবাদী আওয়ামী অপশক্তি কর্তৃক ব্যক্তিগত চরিত্রহনন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও পেশিশক্তির ভয়ঙ্কর হুংকার উপেক্ষা করে মুফতি আমিনী রহ. কাফনের কাপড় সাথে নিয়ে আজীবন সংগ্রামকরে গেছেন। নিজের ছেলেকে গুম করার পরেও সেদিন তাগুতের সাথে আপোষ না করে ঘোষণা করেছিলেন, “আমি কোরানের জন্য আমার ছেলেকে ছাড়তে প্রস্তুত।” মহান আল্লাহ’র কাছে ফরিয়াদ করে বলেছিলেন, ‘‘হে আল্লাহ আমি তোমার কুরআন রক্ষার আন্দোলনে নেমেছি তুমি আমার ছেলেকে রক্ষা কর।’’ শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে মুফতি আমিনী বলেছিলেন, “আমার ছেলেকে তুমি গুম করিয়েছ। আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছি, আল্লাহ শেখ হাসিনার ছেলেকেও তুমি গুম করো।” শাসকগোষ্ঠী শত চেষ্টা করেও মুফতি আমিনীর কন্ঠ স্তব্ধ করকে পারেনি। আপোষহীনতার সাথে সংগ্রাম করে গেছেন তাগুতের বিরুদ্ধে। মুফতি আমিনীর আপোষহীনতার একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত হলো, ১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি আমীরে হেফাজতের গাড়ি বহরে ইসলাম বিদ্বেষী সরকারের হামলার পর হাটহাজারী মাদ্রাসায় ওলামা সম্মেলনের আয়োজন করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। মুফতি আমিনী রহ. সহ দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, হুজুরের সাথে আমিও ছিলাম। ওলামা সম্মেলন শুরু হলো, মাইকে আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ’র নাম ঘোষণা হলো, শুনতেই মুফতি আমিনী রহ. বসার স্থান থেকে উঠে গেলেন, আমীরে হেফাজতকে আদবের সাথে বলে মঞ্চ থেকে নেমে যাচ্ছেন, তখন হেফাজত মহাসচিব বললেন, হযরত আপনি কেন চলে যাচ্ছেন? তা মাইকে ঘোষণা দেন, তখন আমিনী রহ. বজ্রকন্ঠে বললেন, “যে মঞ্চে আওয়ামীলীগ উঠে সেই মঞ্চে আমিনী থাকেনা” মুহূর্তেই নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে অগ্নিময় হয়ে উঠে উপস্থিত ওলামায়ে কেরামের কন্ঠ, আমিনী আমিনী শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে হাটহাজারী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের কক্ষ। তাঁর আপোষহীনতার আরেকটি উজ্জল দৃষ্টান্ত হলো। ১১ সালের দিকে বেফাকের কোন এক বৈঠকে মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ আমিনী সাহেব হুজুরকে মুসাফাহার জন্য হাত বাড়িয়ে দিলে, আমিনী সাহেব তাকে উদ্দেশ্য করে বলে ছিলেন, “আমি কোন দরবারী মোল্লা’র সাথে হাত মিলাই না”। এধরণের জানা অজানা আরো অনেক ঘটনা আছে যা থেকে প্রতিয়মান হয় যে, মুফতি আমীনি রহ. ছিলেন, আপোষহীনতার এক আদর্শ উজ্জল নক্ষত্র এবং মূর্তপ্রতিক। যিনি জীবনের শেষ সময়টুকু পর্যন্ত ইসলাম বিদ্বেষী তাগুতি শাসকগোষ্টীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন। তাদের সকল অপকর্মের দাতঁভাঙ্গা জবাব দিতে গিয়ে র্দীঘ দিন গৃহবন্দিত্ব বরণ করেন, এবং গৃহবন্দি অবস্থায় ইসলাম বিদ্বেষী সরকারের পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যেই ১২/১২/১২ রাত ১২ টা ২০ মিনিটে শহীদী মৃত্যু লাভ করলেন আল্লামা শহীদ মুফতি ফজলুল হক আমীনি রহ.। তাই নিশ্চিত বলতে পারি, তিনি ছিলেন আপোষহীনতার এক মূর্তপ্রতিক। সত্যের পক্ষে ছিলেন চির অকুতোভয়, সদা নির্ভীক আপোষহীন সংগ্রামী।
অনুলিখন: আ.ন.ম আহমদ উল্লাহ যুব বিষয়ক সম্পাদক: ইসলামী ঐক্যজোট