![]() |
জিহাদ সম্পর্কে বিভ্রান্তি নিরসন➦ Download |
কুর’আন থেকে সমাধান ..........................................................................................................।
➧➤(১) বল হে কুর’আন! অনেকে তো বলে যে জিহাদ হলো সন্ত্রাস, জিহাদকারী সন্ত্রাসী এবং জিহাদের মাধ্যমে সমাজে কেবল ফিৎনা ফ্যাসাদই সৃষ্টি হয়। আবার অনেকে বলে জিহাদ সন্ত্রাস নয়, নয় ফিতনা ফ্যাসাদ। এবং জিহাদের মাধ্যমে ফিতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি নয় বরং নির্মূল হয়।
এখন, এ ব্যাপারে তোমার মত কি?
কুর’আন বলে,
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ Download
অর্থ্যাৎ, (কাফের মুশরিকদের বিরুদ্ধে) তোমরা যুদ্ধ করতে থাকো যতক্ষণ না ফিতনা নির্মূল হয় এবং আল্লাহর দ্বীন (পৃথিবীতে) সামগ্রিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। [সূরা আনফালঃ ৩৯]➧➤(২) বল হে কুর’আন! জিহাদ দ্বারা কিভাবে ফিৎনা ফ্যাসাদ নির্মূল করা সম্ভব অথচ জিহাদ করতে গেলে তো ব্যাপক রক্তপাত হয়, অসংখ্য মানুষের প্রাণনাশ ঘটে?
কুর’আন বলে,
وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ
وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ
“তোমরা কাফেরদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও সেখানেই (কেননা, জিহাদ ছাড়া, জালেম কাফেরদের হত্যা করা ছাড়া, ফিৎনা ফ্যাসাদ নির্মূল করা সম্ভব নয়) আর ফিতনা ফ্যাসাদ হত্যা ও প্রাণনাশ অপেক্ষা জঘন্যতম। [বাকারাঃ ১৯১]➧➤(৩) বল হে কুর’আন! জিহাদের ব্যাপারটি কি আমাদের জন্য নতুন কোন বিষয়, না পূর্ববর্তী নবীগণের যমানায়ও এটি ছিলো? এবং পূর্ববর্তী নবীগণও কি জিহাদ করেছিলেন?
কুর’আন বলে,
وَقَتَلَ دَاوُودُ جَالُوتَ وَآتَاهُ اللَّهُ الْمُلْكَ
“আর দাউদ জালূতকে (জালিম বাদশা) হত্যা করলেন এবং আল্লাহ্ তা’আলা তাকে রাজত্ব দান করলেন”। [বাকারাঃ ২৫১] ➧➤(৪) বল হে কুর’আন! পূর্ববর্তী নবীদের সাথে তাদের উম্মতগণও কি জিহাদ করেছিলেন?
কুর’আন বলে,
وَكَأَيِّن مِّن نَّبِيٍّ قَاتَلَ مَعَهُ رِبِّيُّونَ كَثِيرٌ
“আর অনেক নবী বিগত হয়েছেন, যাদের সাথে অনেক যাদের সাথে অনেক আল্লাহভীরু লোক আল্লাহর পথে জিহাদ করেছে” [আলে ইমরানঃ ১৪৬]➧➤(৫) বল হে কুর’আন! পূর্ববর্তী উম্মতরা কি নিজেদের হিফাজতের জন্য তখন জিহাদ কামনা করেছিল? নাকি এমনিতেই তাদের উপর জিহাদকে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো? আর যখন তাদের উপর জিহাদকে ফরজ করা হয়েছিলো তখন তাদের অবস্থাই বা কি হয়েছিলো?
কুর’আন বলে,
أَلَمْ تَرَ إِلَى الْمَلَإِ مِن بَنِي إِسْرَائِيلَ مِن بَعْدِ مُوسَىٰ إِذْ قَالُوا لِنَبِيٍّ لَّهُمُ ابْعَثْ لَنَا مَلِكًا نُّقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَالَ هَلْ عَسَيْتُمْ إِن كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ أَلَّا تُقَاتِلُوا قَالُوا وَمَا لَنَا أَلَّا نُقَاتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَقَدْ أُخْرِجْنَا مِن دِيَارِنَا وَأَبْنَائِنَا فَلَمَّا كُتِبَ عَلَيْهِمُ الْقِتَالُ تَوَلَّوْا إِلَّا قَلِيلًا مِّنْهُمْ وَاللَّهُ عَلِيمٌ بِالظَّالِمِينَ
“মূসার পরে তুমি কি বনী ইসরাঈলের একটি দলকে দেখনি, যখন তারা বলেছে নিজেদের নবীর কাছে যে, আমাদের জন্য একজন বাদশাহ নির্ধারিত করে দিন যাতে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি। নবী বললেন, তোমাদের প্রতিও কি এমন ধারণা করা যায় যে, লড়াইর হুকুম যদি হয়, তাহলে তখন তোমরা লড়বে না? তারা বলল, আমাদের কি হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর পথে লড়াই করব না। অথচ আমরা বিতাড়িত হয়েছি নিজেদের ঘর-বাড়ী ও সন্তান-সন্ততি থেকে। অতঃপর যখন লড়াইয়ের নির্দেশ হলো, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তাদের সবাই ঘুরে দাঁড়ালো। আর আল্লাহ তা’আলা জালেমদের ভাল করেই জানেন”। [বাকারাঃ ২৪৬]➧➤(৬) বল হে কুর’আন! তাহলে মুসলমানদের উপর জিহাদের হুকুম কি? অনেকেই তো জিহাদ পছন্দ করে না, বা জিহাদ করতে চায় না।
কুর’আন বলে,
كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِتَالُ وَهُوَ كُرْهٌ لَّكُمْ وَعَسَىٰ أَن تَكْرَهُوا شَيْئًا وَهُوَ خَيْرٌ لَّكُمْ وَعَسَىٰ أَن تُحِبُّوا شَيْئًا وَهُوَ شَرٌّ لَّكُمْ وَاللَّهُ يَعْلَمُ وَأَنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
"তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়। পক্ষান্তরে তোমাদের কাছে হয়তো কোন একটা বিষয় পছন্দসই নয়, অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হয়তোবা কোন একটি বিষয় তোমাদের কাছে পছন্দনীয় অথচ তোমাদের জন্যে অকল্যাণকর। বস্তুতঃ আল্লাহই জানেন, তোমরা জান না"। [বাকারাঃ ২১৬]➧➤(৭) বল হে কুর’আন! তোমার ঘোষণা হতে তা আমরা বুঝতে পারলাম যে, আমাদের উপর জিহাদ ফরজ হয়ে গেছে। এখন প্রশ্ন হলো, আমাদের মাঝে অনেকেরই তো তেমন কোন সহায় সম্বল নেই। তাহলে আমরা কিভাবে জিহাদ করবো?
কুর’আন বলে,
انفِرُوا خِفَافًا وَثِقَالًا وَجَاهِدُوا بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ
“তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জেহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটি তোমাদের জন্যে অতি উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পার” [তওবাঃ ৪১]➧➤(৮) বল হে কুর’আন! যখন আমরা জিহাদে বের হয়ে যাব, যুদ্ধের ময়দানে পা রাখবো, তখন কি আমাদের কোন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে?
কুর’আন বলে,
وَلَنَبْلُوَنَّكُم بِشَيْءٍ مِّنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِّنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنفُسِ وَالثَّمَرَاتِ وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ
“আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, সম্পদেরক্ষতি ও প্রাণ নাশের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। (আর এ সকল বিপদে) ধৈর্য্যশীলদের সুসংবাদ দিন” [বাকারাঃ১৫৫]➧➤(৯) বল হে কুর’আন! আমাদের পূর্বেও কি কোন সম্প্রদায়কে জিহাদে যাওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরণের কোন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো?
কুর’আন বলে,
فَلَمَّا فَصَلَ طَالُوتُ بِالْجُنُودِ قَالَ إِنَّ اللَّهَ مُبْتَلِيكُم بِنَهَرٍ فَمَن شَرِبَ مِنْهُ فَلَيْسَ مِنِّي وَمَن لَّمْ يَطْعَمْهُ فَإِنَّهُ مِنِّي إِلَّا مَنِ اغْتَرَفَ غُرْفَةً بِيَدِهِ فَشَرِبُوا مِنْهُ إِلَّا قَلِيلًا مِّنْهُمْ فَلَمَّا جَاوَزَهُ هُوَ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ قَالُوا لَا طَاقَةَ لَنَا الْيَوْمَ بِجَالُوتَ وَجُنُودِهِ قَالَ الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلَاقُو اللَّهِ كَم مِّن فِئَةٍ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيرَةً بِإِذْنِ اللَّهِ وَاللَّهُ مَعَ الصَّابِرِينَ
“অতঃপর যখন তালুত (আ) তাঁর সৈন্যদের নিয়ে সামনে অগ্রসর হলেন তখন তিনি তাঁর সৈন্যদের বললেন, ‘নিশ্চই আল্লাহ্ তায়ালা তোমাদের একটি নহরের দ্বারা পরীক্ষা করবেন। যে তাঁর থেকে পানি পান করবে সে আমাদের সাথে থাকতে পারবে না। আর যারা তাঁর থেকে পান করবে না কিংবা সামান্য পরিমাণ পান করবে তারাই আমাদের সাথে থাকতে পারবে’। অতঃপর তাদের অল্প কিছু সংখ্যক বাদ দিয়ে বাকি সকলেই পানি পান করলো। অতঃপর তালুত (আ) যখন তাঁর লোকদের নিয়ে নদী পেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন যারা পানি পান করেছিলো তারা বলল, ‘জালুতের বাহিনীর সাথে মোকাবেলা করার জন্য আজ আমাদের কোন ক্ষমতা নেই। [বাকারাঃ ২৪৯]➧➤(১০) বল হে কুর’আন! পূর্ববর্তী নবী এবং তাদের অনুসারী উম্মতগণ যখন আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য বের হতেন তখন তাদেরও কি এ ধরণের কোন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হতো?
কুর’আন বলে,
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَأْتِكُم مَّثَلُ الَّذِينَ خَلَوْا مِن قَبْلِكُم مَّسَّتْهُمُ الْبَأْسَاءُ وَالضَّرَّاءُ وَزُلْزِلُوا حَتَّىٰ يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَىٰ نَصْرُ اللَّهِ أَلَا إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ
“তোমাদের কি এই ধারণা যে, তোমরা জান্নাতে চলে যাবে, অথচ সে লোকদের অবস্থা অতিক্রম করনি যারা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়েছে। তাদের উপর এসেছে বিপদ ও কষ্ট। আর এমনি ভাবে শিহরিত হতে হয়েছে যাতে নবী ও তাঁর প্রতি যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছে যে, কখন আসবে আল্লাহর সাহায্যে! তোমরা শোনে নাও, আল্লাহর সাহায্যে একান্তই নিকটবর্তী” [বাকারাঃ ২১৪]➧➤(১১) বল হে কুরআন! যখন আমরা জিহাদের ময়দানে শত্রুর মুখোমুখি হব তখন মহান আল্লাহর কাছে আমাদের কি প্রার্থনা করতে হবে?
কুর’আন বলে,
وَلَمَّا بَرَزُوا لِجَالُوتَ وَجُنُودِهِ قَالُوا رَبَّنَا أَفْرِغْ عَلَيْنَا صَبْرًا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
“আর যখন তালূত ও তার সেনাবাহিনী শত্রুর সম্মুখীন হল, তখন বলল, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের মনে ধৈর্য্য সৃষ্টি করে দাও এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখ-আর আমাদের সাহায্য কর সে কাফের জাতির বিরুদ্ধে” [বাকারাঃ ২৫০]
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
“ হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের পাপ সমূহ মাফ করে দিন। কর্ম ক্ষেত্রে আমাদের সীমালঙ্ঘন এবং অবাধ্যতাকে আপনি ক্ষমা করে দিন। আমাদের সুদৃঢ় রাখুন এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুনঃ। [আলে ইমরানঃ ১৪৭]➧➤(১২) বল হে কুরআন! যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে তখন আমরা কি করব?
কুর’আন বলে,
فَإِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا فَضَرْبَ الرِّقَابِ حَتَّىٰ إِذَا أَثْخَنتُمُوهُمْ فَشُدُّوا الْوَثَاقَ فَإِمَّا مَنًّا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَاءً حَتَّىٰ تَضَعَ الْحَرْبُ أَوْزَارَهَا
“অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হয়ে যাবে, তখন তোমরা তাদের গর্দানে আঘাত করতে থাক (হত্যা করতে থাক)। যতক্ষণ না তাদের রক্তের স্রোত প্রবাহিত হয়। (অতঃপর যখন তোমরা তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত করবে) তখন তাদের শক্ত করে বেঁধে ফেল। তারপর হয়তো তাদের উপর অনুগ্রহ করবে, বা মুক্তিপণ নিবে। (এবং তাদের সর্বক্ষণ বন্দী করে রাখবে) যতক্ষণ না তারা তাদের নিজস্ব অস্ত্র পরিত্যাগ করে”। (মুহাম্মদঃ ৪)➧➤(১৩) বল হে কুরআন! কাফিররা যদি যুদ্ধ করতে করতে মসজিদে হারাম বা এজাতীয় সম্মানিত কোন স্থানে এসে আশ্রয় নেয় এবং সেখান থেকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে তাহলে কি সেই স্থানেও কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা মুসলমানদের জন্য বৈধ হবে?
কুর’আন বলে,
وَلَا تُقَاتِلُوهُمْ عِندَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ حَتَّىٰ يُقَاتِلُوكُمْ فِيهِ فَإِن قَاتَلُوكُمْ فَاقْتُلُوهُمْ كَذَٰلِكَ جَزَاءُ الْكَافِرِينَ
“ আর তাদের সাথে লড়াই করো না মসজিদুল হারামের নিকটে যতক্ষণ না তারা তোমাদের সাথে সেখানে লড়াই করে। অবশ্য যদি তারা নিজেরাই তোমাদের সাথে লড়াই করে। তাহলে তাদেরকে হত্যা কর। এই হল কাফেরদের শাস্তি” [বাকারাঃ ১৯১]➧➤(১৪) বল হে কুরআন! মসজিদে হারাম ও আরব উপদ্বীপে কাফির-মুসরিকদের অনুপ্রবেশ বৈধ কি না?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْمُشْرِكُونَ نَجَسٌ فَلَا يَقْرَبُوا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ بَعْدَ عَامِهِمْ هَٰذَا وَإِنْ خِفْتُمْ عَيْلَةً فَسَوْفَ يُغْنِيكُمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ إِن شَاءَ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
“হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। আর যদি তোমরা দারিদ্রতার আশংকা কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়” [তওবাঃ ২৮]➧➤(১৫) বল হে কুরআন! যখন আমরা তোমার কথা মত কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ হব, কাফিররা যখন আমাদের উপর সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে, তুমূল বেগে আক্রমণ করবে তখন আমরা কি করব?
কুর’আন বলে, Download
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمْ فِئَةً فَاثْبُتُوا
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কোন বাহিনীর সাথে সংঘাতে লিপ্ত হও,(এবং তারা তোমাদের বিরুদ্ধে তীব্র বেগে আক্রমণ করতে থাকে) তখন সুদৃঢ় থাক” [আনফালঃ ৪৫]
#(১৬) বল হে কুরআন! যখন চতুর্দিক থেকে গুলী আসতে থাকবে, উপর থেকে বোমারু বিমান গুলো বৃষ্টির মত বোমা ফেলতে থাকবে, যমীনের নীচ হতে একের পর এক ভূমি মাইন বিস্ফোরিত হতে থাকবে তখন আমরা কিভাবে অটল ও দৃঢ়পথ থাকব?
কুর’আন বলে,
وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
“আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর (তাঁর কাছে সাহায্য ও দৃঢ়তা কামনা করতে থাক) যাতে তোমরা উদ্দেশ্যে কৃতকার্য হতে পার” [আনফালঃ৪৫]
#(১৭) বল হে কুরআন! যুদ্ধের ময়দানে সেই বিভীষিকাময় মুহূর্তে, জান-প্রান নিয়ে ছিনি-মিনি খেলার সে নাজুক পরিস্থিতিতে কারো জন্য যুদ্ধ ছেড়ে পলায়ন করা কি জায়েজ হবে?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا لَقِيتُمُ الَّذِينَ كَفَرُوا زَحْفًا فَلَا تُوَلُّوهُمُ الْأَدْبَارَ
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন কাফেরদের সাথে মুখোমুখী হবে, তখন পশ্চাদপসরণ করবে না (যুদ্ধ ছেড়ে পলায়ন করো না)” [আনফালঃ ১৫]
#(১৮) বল হে কুরআন! যদি কেউ সেদিন যুদ্ধের ময়দান হতে পলায়ন করে তাহলে তার শাস্তি কি হবে?
কুর’আন বলে,
وَمَن يُوَلِّهِمْ يَوْمَئِذٍ دُبُرَهُ إِلَّا مُتَحَرِّفًا لِّقِتَالٍ أَوْ مُتَحَيِّزًا إِلَىٰ فِئَةٍ فَقَدْ بَاءَ بِغَضَبٍ مِّنَ اللَّهِ وَمَأْوَاهُ جَهَنَّمُ وَبِئْسَ الْمَصِيرُ
“আর যে লোক সেদিন তাদের থেকে পশ্চাদপসরণ করবে, অবশ্য যে লড়াইয়ের কৌশল পরিবর্তনকল্পে কিংবা যে নিজ সৈন্যদের নিকট আশ্রয় নিতে আসে সে ব্যতীত অন্যরা আল্লাহর গযব সাথে নিয়ে প্রত্যাবর্তন করবে। আর তার ঠিকানা হল জাহান্নাম। বস্তুতঃ সেটা হল নিকৃষ্ট অবস্থান” [আনফালঃ ১৬]
#(১৯) বল হে কুরআন! সম্মুখ সমর ব্যতিত অন্য অবস্থায় আমাদেরকে কি ভাবে যুদ্ধ করতে হবে?
কুর’আন বলে,
فَإِذَا انسَلَخَ الْأَشْهُرُ الْحُرُمُ فَاقْتُلُوا الْمُشْرِكِينَ حَيْثُ وَجَدتُّمُوهُمْ وَخُذُوهُمْ وَاحْصُرُوهُمْ وَاقْعُدُوا لَهُمْ كُلَّ مَرْصَدٍ فَإِن تَابُوا وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ وَآتَوُا الزَّكَاةَ فَخَلُّوا سَبِيلَهُمْ
“অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও” [তওবাঃ ৫]
#(২০) বল হে কুরআন! যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ সম্মানিত মাসগুলোতে যদি কাফিররা মুসলমানদের উপর উৎপীড়ন শুরু করে তাহলে সেই সময়ে তাদের সাথে জিহাদ করা মুসলমানদের জন্য বৈধ হবে?
কুর’আন বলে,
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الشَّهْرِ الْحَرَامِ قِتَالٍ فِيهِ قُلْ قِتَالٌ فِيهِ كَبِيرٌ وَصَدٌّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ وَكُفْرٌ بِهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَإِخْرَاجُ أَهْلِهِ مِنْهُ أَكْبَرُ عِندَ اللَّهِ وَالْفِتْنَةُ أَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ
“সম্মানিত মাস সম্পর্কে তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে যে, তাতে যুদ্ধ করা কেমন? বলে দাও এতে যুদ্ধ করা ভীষণ বড় পাপ। আর আল্লাহর পথে প্রতিবন্দ্বকতা সৃষ্টি করা এবং কুফরী করা, মসজিদে-হারামের পথে বাধা দেয়া এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে বহিস্কার করা, আল্লাহর নিকট তার চেয়েও বড় পাপ। আর ধর্মের ব্যাপারে ফেতনা সৃষ্টি করা নরহত্যা অপেক্ষাও মহা পাপ” [বাকারাঃ ২১৭]
#(২১) বল হে কুরআন! উপরোক্ত পদ্ধতি ছাড়া আর কোন পদ্ধতিতে আমরা কাফিরদের সাথে জিহাদ করব?
কুরআন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا خُذُوا حِذْرَكُمْ فَانفِرُوا ثُبَاتٍ أَوِ انفِرُوا جَمِيعًا
“হে ঈমানদারগণ! নিজেদের অস্ত্র তুলে নাও এবং পৃথক পৃথক সৈন্যদলে কিংবা সমবেতভাবে বেরিয়ে পড়” [সূরা নিসা : ৭১]
#(২২) বল হে কুরআন! কোন কোন লোকদের সাথে আমাদের জিহাদ করতে হবে?
কুরআন বলে,
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ
“হে নবী ! কাফেরদের সাথে যুদ্ধ করুন।” [সূরা তাওবা, আয়াতঃ৭৩]
وَاقْتُلُوهُمْ حَيْثُ ثَقِفْتُمُوهُمْ وَأَخْرِجُوهُم مِّنْ حَيْثُ أَخْرَجُوكُمْ وَالْفِتْنَةُ أَشَدُّ مِنَ الْقَتْلِ
‘‘আর তাদেরকে হত্যাকর যেখানে পাও সেখানেই এবং তাদেরকে বের করে দাও সেখান থেকে যেখান থেকে তারা বের করেছে তোমাদেরকে । বস্তুতঃ ফেতনা ফ্যাসাদ বা দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা হত্যার চেয়েও কঠিন অপরাধ।’’[সূরা বাকারাঃ ১৯১]
وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ
‘‘আর লড়াই কর আল্লাহর ওয়াস্তে তাদের সাথে, যারা লড়াই করে তোমাদের সাথে ।” [সূরা বাকারাঃ১৯০]
قَاتِلُوا الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَا بِالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلَا يُحَرِّمُونَ مَا حَرَّمَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَلَا يَدِينُونَ دِينَ الْحَقِّ مِنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ
“তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম ।” [সূরা তাওবাঃ ২৯]
وَإِن نَّكَثُوا أَيْمَانَهُم مِّن بَعْدِ عَهْدِهِمْ وَطَعَنُوا فِي دِينِكُمْ فَقَاتِلُوا أَئِمَّةَ الْكُفْرِ إِنَّهُمْ لَا أَيْمَانَ لَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَنتَهُونَ
আর যদি ভঙ্গ করে তারা তাদের শপথ প্রতিশ্রুতির পর এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে কুফর প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর । কারণ, এদের কেন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে।” [সূরা আত-তাওবাঃ ১২]
أَلَا تُقَاتِلُونَ قَوْمًا نَّكَثُوا أَيْمَانَهُمْ وَهَمُّوا بِإِخْرَاجِ الرَّسُولِ وَهُم بَدَءُوكُمْ أَوَّلَ مَرَّةٍ أَتَخْشَوْنَهُمْ فَاللَّهُ أَحَقُّ أَن تَخْشَوْهُ إِن كُنتُم
مُّؤْمِنِينَ
“তোমরা কি সেই দলের সাথে যুদ্ধ করবে না; যারা ভঙ্গ করেছে নিজেদের শপথ এবং সঙ্কল্প নিয়েছে রসূলকে বহিস্কারের? আর এরাই প্রথম তোমাদের সাথে বিবাদের সূত্রপাত করেছে । তোমরা কি তাদের ভয় কর? অথচ তোমাদের ভয়ের অধিকতর যোগ্য হলেন আল্লাহ, যদি তোমরা মুমিন হও ।” [সূরা আত-তাওবাঃ ১৩]
وَمَا لَكُمْ لَا تُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَالْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْوِلْدَانِ الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا أَخْرِجْنَا مِنْ هَٰذِهِ الْقَرْيَةِ الظَّالِمِ أَهْلُهَا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ وَلِيًّا وَاجْعَل لَّنَا مِن لَّدُنكَ نَصِيرًا
“আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও ।’’ [সূরা আন-নিসাঃ ৭৫]
#(২৩) বল হে কুরআন! যুদ্ধ জিহাদের পরবর্তীত পরিস্থিতিতে যদি কখনো আমাদের সন্ধি করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় বা কাফিররা যদি আমাদের সাথে সন্ধি করতে আগ্রহী হয় তাহলে অবস্থা বুঝে তাদের সাথে সন্ধি করা কি আমাদের জন্য বৈধ হবে?
কুরআন বলে,
وَإِن جَنَحُوا لِلسَّلْمِ فَاجْنَحْ لَهَا وَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
আর যদি তারা সন্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তাহলে তুমিও সে দিকেই আগ্রহী হও এবং আল্লাহর উপর ভরসা কর। নিঃসন্দেহে তিনি শ্রবণকারী; পরিজ্ঞাত।’’[আনফাল : ৬১]
#(২৪) বল হে কুরআন! কাফিরদের মধ্য থেকে যদি কারো সাথে মুসলমানদের সন্ধি বা চুক্তি থেকে থাকে তাহলে তাদের সাথেও কি জিহাদ করতে হবে?
কুরআন বলে,
إِلَّا الَّذِينَ عَاهَدتُّم مِّنَ الْمُشْرِكِينَ ثُمَّ لَمْ يَنقُصُوكُمْ شَيْئًا وَلَمْ يُظَاهِرُوا عَلَيْكُمْ أَحَدًا فَأَتِمُّوا إِلَيْهِمْ عَهْدَهُمْ إِلَىٰ مُدَّتِهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِينَ
"তবে যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তি বদ্ধ, অতপরঃ যারা তোমাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেনি এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাউকে সাহায্যও করেনি, তাদের সাথে কৃত চুক্তিকে তাদের দেয়া মেয়াদ পর্যন্ত পূরণ কর । অবশ্যই আল্লাহ সাবধানীদের পছন্দ করেন ।" [সূরা আত-তাওবাঃ ৪]
#(২৫) বল হে কুরআন! কাফিররা আমাদের সাথে সন্ধি চুক্তি করার পর যদি সেই সন্ধির মর্যাদা রক্ষা না করে এবং তাদের তরফ থেকে সন্ধি ভেঙ্গে ফেলার কোন আভাস আমরা লক্ষ্য করি, তাহলে তখনও কি আমাদের উপর সেই সন্ধি বজায় রাখা আবশ্যক?
কুরআন বলে,
وَإِمَّا تَخَافَنَّ مِن قَوْمٍ خِيَانَةً فَانبِذْ إِلَيْهِمْ عَلَىٰ سَوَاءٍ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْخَائِنِينَ
"তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের ভয় থাকে, তবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই ছুঁড়ে ফেলে দাও এমনভাবে যেন হয়ে যাও তোমরাও তারা সমান । নিশ্চয়ই আল্লাহ ধোকাবাজ, প্রতারককে পছন্দ করেন না ।" [সূরা আল-আনফালঃ ৫৮]
#(২৬) বল হে কুরআন! আর যদি কাফিররা সন্ধিচুক্তিকে ভেঙ্গেই দেয় এবং আমাদের দ্বীন ঈমান নিয়ে বিদ্রূপ করে তাহলে আমরা তখন কি করব?
কুরআন বলে,
وَإِن نَّكَثُوا أَيْمَانَهُم مِّن بَعْدِ عَهْدِهِمْ وَطَعَنُوا فِي دِينِكُمْ فَقَاتِلُوا أَئِمَّةَ الْكُفْرِ إِنَّهُمْ لَا أَيْمَانَ لَهُمْ لَعَلَّهُمْ يَنتَهُونَ
"আর যদি ভঙ্গ করে তারা তাদের শপথ প্রতিশ্রুতির পর এবং বিদ্রুপ করে তোমাদের দ্বীন সম্পর্কে, তবে কুফর প্রধানদের সাথে যুদ্ধ কর । কারণ, এদের কেন শপথ নেই যাতে তারা ফিরে আসে ।" [সূরা আত-তাওবাঃ ১২]
#(২৭) বল হে কুরআন! যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা যদি কাফিরদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হই তাহলে তাদের কি করব?
কুরআন বলে,
حَتَّىٰ إِذَا أَثْخَنتُمُوهُمْ فَشُدُّوا الْوَثَاقَ فَإِمَّا مَنًّا بَعْدُ وَإِمَّا فِدَاءً حَتَّىٰ تَضَعَ الْحَرْبُ أَوْزَارَهَا
"অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দার মার, অবশেষে যখন তাদরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল । অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও । তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন । কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান । যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না।" [সূরা মুহাম্মাদঃ ৪]
#(২৮) বল হে কুরআন! কাফির মুশরিকদের বিরুদ্ধে এধরনের জিহাদ আমাদেরকে কতদিন পর্যন্ত চালিয়ে যাতে হবে?
কুরআন বলে,
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ لِلَّهِ
"আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয় ।" [সূরা আল-বাকারাঃ ১৯৩]
#(২৯) বল হে কুরআন! আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য যখন আমরা জিহাদে অবতীর্ণ হব তখন মহান আল্লাহ্ কি আমাদেরকে সাহায্য করবেন? যুদ্ধের ময়দানে আমরা আল্লাহর সাহায্য পাবো তো?
কুরআন বলে,
بَلَىٰ إِن تَصْبِرُوا وَتَتَّقُوا وَيَأْتُوكُم مِّن فَوْرِهِمْ هَٰذَا يُمْدِدْكُمْ رَبُّكُم بِخَمْسَةِ آلَافٍ مِّنَ الْمَلَائِكَةِ مُسَوِّمِينَ
"অবশ্য তোমরা যদি সবর কর এবং বিরত থাক আর তারা যদি তখনই তোমাদের উপর চড়াও হয়, তাহলে তোমাদের পালনকর্তা চিহ্নিত ঘোড়ার উপর পাঁচ হাজার ফেরেশতা তোমাদের সাহায্যে পাঠাতে পারেন ।" [সূরা আলে ইমরানঃ ১২৫]
#(৩০) বল হে কুরআন! আমরা তো দেখি যে, কাফির-মুশরিকরা আমাদের তুলনায় সংখ্যায় অজস্র। অর্থ-সম্পদ রসদ-সম্ভার, যুদ্ধাস্ত্র প্রস্ততি প্রতিরক্ষা শক্তি, সর্বদিক দিয়ে অপ্রতিরোদ্ধ, প্রবল পরাক্রান্ত। সুতরাং এ অবস্থায় আমরা যদি তাদের সাথে লড়তে যাই তাহলে তো তারা আমাদেরকে একেবারে নিঃশেষ করে দিবে। ধরার বুক থেকে আমাদের নাম নিশানা একেবারে মুছে দিবে। তাহলে এমতাবস্থায় আমরা কিভাবে কাফিরদের থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করব এবং তাদেরকে পরাস্ত করব?
কুরআন বলে,
لَن يَضُرُّوكُمْ إِلَّا أَذًى وَإِن يُقَاتِلُوكُمْ يُوَلُّوكُمُ الْأَدْبَارَ ثُمَّ لَا يُنصَرُونَ
''যৎসামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না । আর যদি তারা তোমাদের সাথে লড়াই করে, তাহলে তারা পশ্চাদপসরণ করবে । অতঃপর তাদের সাহায্য করা হবে না ।'' [সূরা আলে ইমরান: ১১১]
#(৩১) বল হে কুরআন! মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার জন্য কোন শর্ত আছে কি না? যদি থেকে থাকে তাহলে তা কি?
কুরআন বলে,
وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
"আর তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে, তোমরাই জয়ী হবে।" [সূরা আলে ইমরানঃ১৩৯]
#(৩২) বল হে কুরআন! মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এ ধরনের সাহায্য পেয়ে আমাদের পূর্বে কি কেউ বিজয় অর্জন করেছিলো?
কুরআন বলে,
كَم مِّن فِئَةٍ قَلِيلَةٍ غَلَبَتْ فِئَةً كَثِيرَةً بِإِذْنِ اللَّهِ
''সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে।'' [সূরা বাকারাঃ ২৪৯]
#(৩৩) বল হে কুরআন! যে সকল যুদ্ধে মুসলমানরা এধরনের সাহায্য পেয়ে বিজয় অর্জন করেছিলো এমন কিছু যুদ্ধের কথা বলো তো?
কুরআন বলে,
وَلَقَدْ نَصَرَكُمُ اللَّهُ بِبَدْرٍ وَأَنتُمْ أَذِلَّةٌ فَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ
''বস্তুতঃ আল্লাহ বদরের যুদ্ধে তোমাদের সাহায্য করেছেন, অথচ তোমরা ছিলে দুর্বল। কাজেই আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হতে পারো।'' [সূরা আলে ইমরানঃ ১২৩]
فَانقَلَبُوا بِنِعْمَةٍ مِّنَ اللَّهِ وَفَضْلٍ لَّمْ يَمْسَسْهُمْ سُوءٌ وَاتَّبَعُوا رِضْوَانَ اللَّهِ وَاللَّهُ ذُو فَضْلٍ عَظِيمٍ
''অতঃপর ফিরে এল মুসলমানরা আল্লাহর অনুগ্রহ (বিজয়) নিয়ে, তদের কিছুই অনিষ্ট হলো না। তারপর তারা আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত হল। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ অতি বিরাট।'' [সূরা আলে ইমরানঃ ১৭৪]
وَرَدَّ اللَّهُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِغَيْظِهِمْ لَمْ يَنَالُوا خَيْرًا وَكَفَى اللَّهُ الْمُؤْمِنِينَ الْقِتَالَ وَكَانَ اللَّهُ قَوِيًّا عَزِيزًا
''আল্লাহ কাফেরদেরকে ক্রুদ্ধাবস্থায় ফিরিয়ে দিলেন। তারা কোন কল্যাণ পায়নি। যুদ্ধ করার জন্য আল্লাহ মুমিনদের জন্যে যথেষ্ট হয়ে গেছেন। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।’’ [সূরা আল-আহযাবঃ ২৫]
لَقَدْ نَصَرَكُمُ اللَّهُ فِي مَوَاطِنَ كَثِيرَةٍ وَيَوْمَ حُنَيْنٍ
''আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেছন অনেক ক্ষেত্রে এবং হোনাইনের দিনে।'' [সূরা তাওবাঃ ২৫]
#(৩৪) বল হে কুরআন! ইসলাম ও মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রথম লড়াই বদরের রণক্ষেত্রে মুসলমান এবং কাফিরদের অবস্থান কেমন ছিলো?
কুরআন বলে,
إِذْ أَنتُم بِالْعُدْوَةِ الدُّنْيَا وَهُم بِالْعُدْوَةِ الْقُصْوَىٰ وَالرَّكْبُ أَسْفَلَ مِنكُمْ
''আর যখন তোমরা ছিলে সমরাঙ্গনের এ প্রান্তে আর তারা ছিল সে প্রান্তে অথচ কাফেলা তোমাদের থেকে নীচে নেমে গিয়েছিল ।'' [সূরা আনফালঃ ৪২]
#(৩৫) বল হে কুরআন! আমরা তো জানি যে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সাহাবীদেরকে নিয়ে কাফিরদের সাথে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে বদরে জাননি বরং তাঁর উদ্দেশ্য ছিলো আবু সুফিয়ানের বাণিজ্য কাফেলা। আর আল্লাহও একটি দলের উপর মুসলমানদের বিজয় দানের ওয়াদা করেছিলেন। তাহলে তিনি আবু সুফিয়ানের বাণিজ্য কাফেলার উপর মুসলমানদের বিজয় –যা ছিলো সহজসাধ্য- না দিয়ে মক্কার কাফিরদের সাথে যুদ্ধ বাধাতে গেলেন কেন?
কুর’আন বলে,
وَإِذْ يَعِدُكُمُ اللَّهُ إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ أَنَّهَا لَكُمْ وَتَوَدُّونَ أَنَّ غَيْرَ ذَاتِ الشَّوْكَةِ تَكُونُ لَكُمْ وَيُرِيدُ اللَّهُ أَن يُحِقَّ الْحَقَّ بِكَلِمَاتِهِ وَيَقْطَعَ دَابِرَ الْكَافِرِينَ
''আর যখন আল্লাহ দু’টি দলের একটির ব্যাপারে তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছিলেন যে, সেটি তোমাদের হস্তগত হবে, আর তোমরা কামনা করছিলে যাতে কোন রকম কন্টক নেই, তাই তোমাদের ভাগে আসুক; অথচ আল্লাহ চাইতেন সত্যকে স্বীয় কালামের মাধ্যমে সত্যে পরিণত করতে এবং কাফেরদের মূল কর্তন করে দিতে।'' [সুরা আল-আনফালঃ৭]
#(৩৬) বল হে কুরআন! যদি আমরা সৎ পথে চলতে গিয়ে, জিহাদ করতে গিয়ে কখনও কাফিরদের ভীষণ চক্রান্তের শিকার হয়ে যাই, তাহলে তখন মহান আল্লাহ্ কি আমাদেরকে উদ্ধার করবেন?
কুর’আন বলে,
ثُمَّ نُنَجِّي رُسُلَنَا وَالَّذِينَ آمَنُوا كَذَٰلِكَ حَقًّا عَلَيْنَا نُنجِ الْمُؤْمِنِينَ
''অতঃপর আমি বাঁচিয়ে নেই নিজের রসূলগণকে এবং তাদেরকে যারা ঈমান এনেছে এমনিভাবে। ঈমানদারদের বাঁচিয়ে নেয়া আমার দায়িত্বও বটে।'' [সুরা ইউনূছঃ ১০৩]
وَكَانَ حَقًّا عَلَيْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِينَ
''মুমিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব।'' [সূরা আর-রূমঃ ৪৭]
#(৩৭) বল হে কুরআন! আমরা যদি তোমার কথামত মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি তাহলে মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে কি পুরুস্কার দিবেন?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا هَلْ أَدُلُّكُمْ عَلَىٰ تِجَارَةٍ تُنجِيكُم مِّنْ عَذَابٍ أَلِيمٍتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنفُسِكُمْ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُو, يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِي جَنَّاتِ عَدْنٍ ۚ ذَٰلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
''মুমিনগণ, আমি কি তোমাদেরকে এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে? তা এই যে, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপণ করে জেহাদ করবে। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম; যদি তোমরা বোঝ। তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন।এবং এমন জান্নাতে দাখিল করবেন, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বসবাসের জান্নাতে উত্তম বাসগৃহে। এটা মহাসাফল্য।'' [সূরা আস-সাফঃ ১০-১২]
#(৩৮) বল হে কুরআন! এই আয়াতে তো জিহাদকে লাভজনক একটি ব্যবসা বলা হয়েছে, আর ব্যবসার জন্য তো পণ্য ও মূল্য এই দু’টি জিনিসের প্রয়োজন হয় সুতরাং জিহাদ যদি লাভজনক ব্যবসাই হয়ে থাকে তাহলে তাতে পণ্য ও মূল্য কোথায়?
কুর’আন বলে,
إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ
‘‘আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত।’’ [সুরা তাওবাঃ ১১১]
#(৩৯) বল হে কুরআন! যখন আমাদের জান মাল জান্নাতের বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেছে তাহলে এখন আমাদের কাজ কি?
কুর’আন বলে,
فَلْيُقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ الَّذِينَ يَشْرُونَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا بِالْآخِرَةِ
''কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য (কাফিরদের বিরুদ্দে)।'' [সুরা আন-নিসাঃ৭৪]
#(৪০) বল হে কুরআন! জিহাদের মাধ্যমে কি কেবল জান্নাতই লাভ করা যাবে? না তার সাথে সাথে মহান আল্লাহ তা’আলার ক্ষমা, সন্তষ্টিও অর্জন করা যাবে?
কুর’আন বলে,
فَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَأُخْرِجُوا مِن دِيَارِهِمْ وَأُوذُوا فِي سَبِيلِي وَقَاتَلُوا وَقُتِلُوا لَأُكَفِّرَنَّ عَنْهُمْ سَيِّئَاتِهِمْ وَلَأُدْخِلَنَّهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ثَوَابًا مِّنْ عِندِ اللَّهِ وَاللَّهُ عِندَهُ حُسْنُ الثَّوَابِ
‘‘তারপর সে সমস্ত লোক যারা হিজরত করেছে, তাদেরকে নিজেদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের প্রতি উৎপীড়ন করা হয়েছে আমার পথে এবং যারা লড়াই করেছে ও মৃত্যুবরণ করেছে, অবশ্যই আমি তাদের উপর থেকে অকল্যাণকে অপসারিত করব। এবং তাদেরকে প্রবিষ্ট করব জান্নাতে যার তলদেশে নহর সমূহ প্রবাহিত। এই হলো বিনিময় আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর আল্লাহর নিকট রয়েছে উত্তম বিনিময়।’’ [সুরা আলে ইমরানঃ ১৯৫]
#(৪১) বল হে কুরআন! অনেকেই তো আল্লাহ্ তা’আলার ভালবাসা পেতে চায়, এখন তোমার মতে আল্লাহর ভালবাসা পেতে হলে কি করতে হবে? এবং আল্লাহ্ তা’আলা কাদেরকে ভালবাসেন?
কুর’আন বলে,
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِهِ صَفًّا كَأَنَّهُم بُنْيَانٌ مَّرْصُوصٌ
‘‘আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন, যারা তাঁর পথে সারিবদ্ধভাবে লড়াই করে, যেন তারা সীসাগালানো প্রাচীর।’’ [সূরা আস-সাফঃ৪]
#(৪২) বল হে কুরআন! আমরা তো দেখি যে কাফির-মুশরিকরাই ধন-দৌলতের প্রাচুর্যের মধ্যে আরামে আছে। আর আমাদেরকে আল্লাহ্ তা’আলা যদি সত্যিই ভালোবাসেন তাহলে কাফির-মুশরিকদের মতো আমাদের এতো ধন-দৌলত নেই কেন?
কুর’আন বলে,
فَلَا تُعْجِبْكَ أَمْوَالُهُمْ وَلَا أَوْلَادُهُمْ ۚ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُعَذِّبَهُم بِهَا فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَتَزْهَقَ أَنفُسُهُمْ وَهُمْ كَافِرُونَ
‘‘সুতরাং তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত না করে। আল্লাহর ইচ্ছা হল এগুলো দ্বারা দুনিয়ার জীবনে তাদের আযাবে নিপতিত রাখা।’’ [সূরা আত-তাওবা; ৫৫]
#(৪৩) বল হে কুরআন! কারা আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশা করতে পারে? কারাই বা আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী হতে পারে? যারা আল্লাহর পথে ঈমান সহকারে জিহাদ করে তারা না যারা জিহাদ ছেড়ে বসে থাকে তারা?
কুর’আন বলে,
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَٰئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَتَ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
‘‘আর এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই যে, যারা ঈমান এনেছে এবং যারা হিজরত করেছে আর আল্লাহর পথে লড়াই (জেহাদ) করেছে, তারা আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী করুনাময়।’’ [সূরা আল-বাকারাঃ ২১৮]
#(৪৪) বল হে কুরআন! আমরা যারা শেষ নবীর উম্মত তারা নাকি সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত। কিন্তু কেন? কোন কাজের বিনিময়ে মহান আল্লাহ্ তা’আলা আমাদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি ও সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত বলে ঘোষণা দিলেন?
কুর’আন বলে,
كُنتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ
‘‘তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে।’’ [সূরা আলে ইমরান:১১০]
#(৪৫) বল হে কুরআন! যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে আর যারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে না তারা উভয়ে কি মর্যাদার দিক দিয়ে বরাবর?
কুর’আন বলে,
لَّا يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ وَالْمُجَاهِدُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ ۚ فَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ عَلَى الْقَاعِدِينَ دَرَجَةً ۚ وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَفَضَّلَ اللَّهُ الْمُجَاهِدِينَ عَلَى الْقَاعِدِينَ أَجْرًا عَظِيمًا
‘‘গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে, আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন।’’ [সূরা আন-নিসাঃ৯৫]
#(৪৬) বল হে কুরআন! আমল সমূহের মান ও স্তরের ক্ষেত্রে জিহাদের স্তর কোন পর্যায়ে? মসজিদুল হারাম আবাদ করা, হাজীদেরকে পানি সরবরাহকরা, বাইতুল্লাহ শরীফের সংরক্ষণকরা ও এধরনের আরো যত বড় বড় ইবাদত আছে জিহাদের মান ও স্তর কি তার সমান না তারও উপরে?
কুর’আন বলে,
أَجَعَلْتُمْ سِقَايَةَ الْحَاجِّ وَعِمَارَةَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ كَمَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَجَاهَدَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ۚ لَا يَسْتَوُونَ عِندَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
الَّذِينَ آمَنُوا وَهَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ أَعْظَمُ دَرَجَةً عِندَ اللَّهِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ
‘‘তোমরা কি হাজীদের পানি সরবরাহ ও মসজিদুল-হারাম আবাদকরণকে সেই লোকের সমান মনে কর, যে ঈমান রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি এবং যুদ্ধ করেছে আল্লাহর রাহে, এরা আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান নয়, আর আল্লাহ জালেম লোকদের হেদায়েত করেন না। যারা ঈমান এনেছে, দেশ ত্যাগ করেছে এবং আল্লাহর রাহে নিজেদের জান ও মাল দিয়ে জেহাদ করেছে, তাদের বড় মর্যাদা রয়েছে আল্লাহর কাছে আর তারাই সফলকাম।’’ [সূরা আত-তাওবাঃ ১৯-২০]
#(৪৭) বল হে কুরআন! আমরা যদি তোমার কথা মতো মহান আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে মৃত্যু বরণকরি তাহলে অন্যান্য সাধারণ মৃতদের মতো আমাদেরকেও কি মৃত বলা হবে?
কুর’আন বলে,
وَلَا تَقُولُوا لِمَن يُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتٌ ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلَٰكِن لَّا تَشْعُرُونَ
‘‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।’’ [সূরা আল-বাকারাঃ১৫৪]
#(৪৮) বল হে কুরআন! যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তাদেরকে কেন মৃত বলবোনা? কেননা, তারা যদি জীবিত হয় তাহলে তাদের জন্য তো রিযিকের প্রয়োজন। তাহলে তারা রিযিক পায় কোথায়?
কুর’আন বলে,
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
‘‘আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত।’’ [সূরা আলে ইমরানঃ ১৬৯]
#(৪৯) বল হে কুরআন! আমরা যদি আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণকরি তাহলে আমাদের গুনাহ সমূহ মাফ হবে কি? মহান আল্লাহ্ কি আমাদের জীবনের সকল অপরাধ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন?
কুর’আন বলে,
وَلَئِن قُتِلْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَوْ مُتُّمْ لَمَغْفِرَةٌ مِّنَ اللَّهِ وَرَحْمَةٌ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
‘‘আর তোমরা যদি আল্লাহর পথে নিহত হও কিংবা মৃত্যুবরণ কর, তোমরা যা কিছু সংগ্রহ করে থাক আল্লাহ তা’আলার ক্ষমা ও করুণা সে সবকিছুর চেয়ে উত্তম।’’ [সূরা আলে ইমরানঃ ১৫৭]
#(৫০) বল হে কুরআন! আমরা আল্লাহর পথে নিহত হলে আমরা জান্নাত পাবো তো?
কুর’আন বলে,
وَالَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَلَن يُضِلَّ أَعْمَالَهُمْ
سَيَهْدِيهِمْ وَيُصْلِحُ بَالَهُمْ
وَيُدْخِلُهُمُ الْجَنَّةَ عَرَّفَهَا لَهُمْ
‘‘যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না। তিনি তাদেরকে পথ প্রদর্শন করবেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করবেন। অতঃপর তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যা তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন।’’ [সূরা মুহাম্মাদঃ৪-৬]
#(৫১) বল হে কুরআন! যারা মহান আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে শহীদ হয় জিহাদ থেকে বিরত অনেকেই তো তাদের সম্পর্কে বলে যে, যদি তারা আমাদের সাথে থাকতো তাহলে তারা তো আর এভাবে মারা যেতোনা। মৃত্যু ভয়ে ভীত লোকদের এধরনের উক্তি তোমার দৃষ্টিতে কেমন?
কুর’আন বলে,
الَّذِينَ قَالُوا لِإِخْوَانِهِمْ وَقَعَدُوا لَوْ أَطَاعُونَا مَا قُتِلُوا قُلْ فَادْرَءُوا عَنْ أَنفُسِكُمُ الْمَوْتَ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
‘‘ওরা হলো যে সব লোক, যারা বসে থেকে নিজেদের ভাইদের সম্বদ্ধে বলে, যদি তারা আমাদের কথা শুনত (জিহাদে না যেত), তবে নিহত হত না। তাদেরকে বলে দিন, এবার তোমাদের নিজেদের উপর থেকে মৃত্যুকে সরিয়ে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাক। [সূরা আলে ইমরানঃ১৬৮]
#৫২) বল হে কুরআন! জিহাদ ও মুজাহিদদের সম্পর্কে এধরণের উক্তি করা মুসলমানদের জন্য উচিত কি না?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَكُونُوا كَالَّذِينَ كَفَرُوا وَقَالُوا لِإِخْوَانِهِمْ إِذَا ضَرَبُوا فِي الْأَرْضِ أَوْ كَانُوا غُزًّى لَّوْ كَانُوا عِندَنَا مَا مَاتُوا وَمَا قُتِلُوا
‘‘হে ঈমাণদারগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা কাফের হয়েছে এবং নিজেদের ভাই বন্ধুরা যখন কোন অভিযানে বের হয় কিংবা জেহাদে যায়, তখন তাদের সম্পর্কে বলে, তারা যদি আমাদের সাথে থাকতো, তাহলে মরতোও না আহতও হতো না।’’ [সূরা আলে ইমরানঃ১৫৬]
#(৫৩) বল হে কুরআন! আমরা বুঝলাম যে জিহাদের মান ও স্তর অনেক উপরে এবং আমাদেরকেও জিহাদ করতে হবে তবে প্রশ্ন হল এতো কষ্ট করে আমাদের জিহাদ করা এবং ফেরেশতা দ্বারা আমাদের আবার সাহায্য করা এত কিছুর কি প্রয়োজন? আল্লাহ্ তা’আলা কি নিজেই কাফিরদেরকে ধ্বংস ও বরবাদ করে দিতে পারেন না? তিনি কি দমিয়ে দিতে পারেন না বুশ-ব্লেয়ার সহ সকল কুফরি শক্তির অন্যায়-অবৈধ আস্ফালন? তাদের অস্ত্র-শস্ত্র, সৈন্য-সামন্ত কি তিনি নিজেই সাগরে নিমজ্জিত করে ধরার বুক থেকে তাদেরকে একেবারে নিশ্চিহ করে দিতে পারেন না? তিনি তো এটা অবশ্যই পারেন; কেননা, তিনি সকল ক্ষমতার একচ্ছত্র অধিকারী। তাহলে তিনি কেন তা করেন না?
কুর’আন বলে,
وَلَوْ يَشَاءُ اللَّهُ لَانتَصَرَ مِنْهُمْ وَلَٰكِن لِّيَبْلُوَ بَعْضَكُم بِبَعْضٍ
"আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের (কাফির-মুশরিকদের) কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন।(তাদেরকে শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করেও দিতে পারতেন) কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে(কাফিরদের) কতকের(মুসলমানদের) দ্বারা পরীক্ষা করতে চান(অর্থাৎ তিনি দেখতে চান যে কারা কাফির মুশরিক নামধারী জালিমদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসে)।’’ [সূরা মুহাম্মাদঃ ৪]
#(৫৪) বল হে কুরআন! তাহলে কি আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের দ্বারাই কাফিরদের ধ্বংস করতে চান? তাদের অন্যায় অপরাধের শাস্তি দিতে চান?
কুর’আন বলে,
قَاتِلُوهُمْ يُعَذِّبْهُمُ اللَّهُ بِأَيْدِيكُمْ وَيُخْزِهِمْ وَيَنصُرْكُمْ عَلَيْهِمْ وَيَشْفِ صُدُورَ قَوْمٍ مُّؤْمِنِينَ
وَيُذْهِبْ غَيْظَ قُلُوبِهِمْ وَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
‘‘যুদ্ধ কর ওদের সাথে, আল্লাহ তোমাদের হস্তে তাদের শাস্তি দেবেন। তাদের লাঞ্ছিত করবেন, তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয়ী করবেন এবং মুসলমানদের অন্তরসমূহ শান্ত করবেন।এবং তাদের মনের ক্ষোভ দূর করবেন। আর আল্লাহ যার প্রতি ইচ্ছা ক্ষমাশীল হবে, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। এবং তাদের মনের ক্ষোভ দূর করবেন। আর আল্লাহ যার প্রতি ইচ্ছা ক্ষমাশীল হবে, আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’’ [সূরা তওবাঃ১৪-১৫]
#(৫৫) বল হে কুরআন! মুমিনদের মধ্যে যদি কখনো দ্বন্দ-সংঘাত বেঁধে যায় তাহলে তখন আমাদের কি করতে হবে?
কুর’আন বলে,
وَإِن طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا فَإِن بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَىٰ فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّىٰ تَفِيءَ إِلَىٰ أَمْرِ اللَّهِ فَإِن فَاءَتْ فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَأَقْسِطُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ
‘‘যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন।’’ [সূরা আল-হুজুরাতঃ৯]
#(৫৬) বল হে কুরআন! যদি কোন মুসলমান অপর কোন মুসলমানের দ্বারা আঘাত প্রাপ্ত হয়, এবং সে তার আঘাতের প্রতিশোধ নিতে চায় তাহলে তার জন্য কতটুকু প্রতিশোধ নেয়া বৈধ?
কুর’আন বলে,
وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُوا بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُم بِهِ وَلَئِن صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِّلصَّابِرِينَ
‘‘আর যদি তোমরা প্রতিশোধ গ্রহণ কর, তবে ঐ পরিমাণ প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, যে পরিমাণ তোমাদেরকে কষ্ট দেয়া হয়। যদি সবর কর, তবে তা সবরকারীদের জন্যে উত্তম। [সূরা আন-নাহলঃ ১২৬]
#(৫৭) বল হে কুরআন! জিহাদ করতে হলে তো তার জন্য প্রস্ততি নিতে হবে। প্রস্ততি ছাড়া তো জিহাদ করা সম্ভব নয়। তাহলে কি আমাদেরকে জিহাদের জন্য প্রস্ততিও গ্রহণ করতে হবে?
কুর’আন বলে,
وَأَعِدُّوا لَهُم مَّا اسْتَطَعْتُم مِّن قُوَّةٍ وَمِن رِّبَاطِ الْخَيْلِ تُرْهِبُونَ بِهِ عَدُوَّ اللَّهِ وَعَدُوَّكُمْ وَآخَرِينَ مِن دُونِهِمْ لَا تَعْلَمُونَهُمُ اللَّهُ يَعْلَمُهُمْ
‘‘আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, যেন প্রভাব পড়ে আল্লাহর শুত্রুদের উপর এবং তোমাদের শত্রুদের উপর আর তাদেরকে ছাড়া অন্যান্যদের উপর ও যাদেরকে তোমরা জান না; আল্লাহ তাদেরকে চেনেন।’’ [সূরা আল-আনফালঃ ৬০]
#(৫৮) বল হে কুরআন! অনেকেই তো জিহাদের কথা বলে কিন্তু জিহাদের জন্য প্রস্ততি নেয় না। তাহলে তাদের এই সকল কথা-বার্তা, ভাব-ভঙ্গি এবং জিহাদ করার আগ্রহ প্রকাশ করে এত গরম গরম বক্তৃতা বিবৃতি কি শধুই ভ্রান্তি আর প্রতারনা? তারা কি সত্যিকারে জিহাদ করতে চায়না।
কুর’আন বলে,
وَلَوْ أَرَادُوا الْخُرُوجَ لَأَعَدُّوا لَهُ عُدَّةً وَلَٰكِن كَرِهَ اللَّهُ انبِعَاثَهُمْ فَثَبَّطَهُمْ وَقِيلَ اقْعُدُوا مَعَ الْقَاعِدِينَ
আর যদি তারা বের হবার সংকল্প নিত, তবে অবশ্যই কিছু সরঞ্জাম প্রস্তুত করতো। কিন্তু তাদের উত্থান আল্লাহর পছন্দ নয়, তাই তাদের নিবৃত রাখলেন এবং আদেশ হল বসা লোকদের সাথে তোমরা বসে থাক। [সূরা আত তাওবাঃ ৪৬]
#(৫৯) বল হে কুরআন! আল্লাহ্ তা’আলা কেন তাদের উত্থানকে অপছন্দ করলেন?
কুর’আন বলে,
لَوْ خَرَجُوا فِيكُم مَّا زَادُوكُمْ إِلَّا خَبَالًا وَلَأَوْضَعُوا خِلَالَكُمْ يَبْغُونَكُمُ الْفِتْنَةَ
‘‘যদি তোমাদের সাথে তারা বের হত, তবে তোমাদের অনিষ্ট ছাড়া আর কিছু বৃদ্ধি করতো না, আর অশ্ব ছুটাতো তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশে। [সূরা আত-তওবাঃ ৪৭]
#(৬০) বল হে কুরআন! জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পর কি করতে হবে? প্রস্তুতি নেওয়ার পরও কি সর্বদা জিহাদের অস্ত্র-শস্ত্র প্রস্তুত করে রাখতে হবে?
কুর’আন বলে,
وَلْيَأْخُذُوا حِذْرَهُمْ وَأَسْلِحَتَهُمْ
‘‘এবং তারা যেন সর্বদা নিজ অস্ত্র-সস্ত্র সাথে রাখে।’’ [সূরা আন-নিসাঃ১০২]
#(৬১) বল হে কুরআন! আমাদেরকে সর্বদা এ ধরনের প্রস্তুত হয়ে থাকতে হবে কেন? আর কেনই বা সর্বদা সাথে অস্ত্র রাখতে হবে?
কুর’আন বলে,
وَدَّ الَّذِينَ كَفَرُوا لَوْ تَغْفُلُونَ عَنْ أَسْلِحَتِكُمْ وَأَمْتِعَتِكُمْ فَيَمِيلُونَ عَلَيْكُم مَّيْلَةً وَاحِدَةً
‘‘(কারণ) কাফেররা চায় যে, তোমরা কোন রূপে অসতর্ক থাক (তুমাদের অস্ত্র-সস্ত্র থেকে), যাতে তারা একযোগে তোমাদেরকে আক্রমণ করে বসে।’’ [সূরা আন-নিসা ১০২]
#(৬২) বল হে কুরআন! যদি কোন সমস্যার কারনে সাথে অস্ত্র রাখা না যায় তাহলে সেজন্য কি আমদের গুনা হবে?
কুর’আন বলে,
وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ إِن كَانَ بِكُمْ أَذًى مِّن مَّطَرٍ أَوْ كُنتُم مَّرْضَىٰ أَن تَضَعُوا أَسْلِحَتَكُمْ ۖ وَخُذُوا حِذْرَكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ أَعَدَّ لِلْكَافِرِينَ عَذَابًا مُّهِينًا
‘‘যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও তবে স্বীয় অস্ত্র পরিত্যাগ করায় তোমাদের কোন গোনাহ নেই এবং (অন্য সকল অবস্থায়) সাথে নিয়ে নাও তোমাদের আত্নরক্ষার অস্ত্র। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের জন্যে অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।’’ [সূরা আন-নিসা ১০২]
#(৬৩) বল হে কুরআন! জিহাদের জন্য সমরাস্ত্রের প্রস্তুতির সাথে সাথে আমাদেরকে জিহাদের প্রস্তুতি স্বরূপ আর কি করতে হবে?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ عَلَى الْقِتَالِ
‘‘হে নবী, আপনি মুসলমানগণকে উৎসাহিত করুন ক্বিতাল তথা জেহাদের জন্য।’’ [সূরা আল-আনফাল: ৬৫]
#(৬৪) বল হে কুরআন! জিহাদের জন্য আহ্বান করা ও উদ্ধুদ্ধ করার পর যদি কেউ সে আহ্বানে সাড়া না দেয়, জিহাদের জন্য এগিয়ে না আসে তাহলে তখন আমাদের কি করতে হবে? আমরা ও কি তাদের মতো জিহাদ বাদ দিয়ে, জিহাদের কাজ ছেড়ে দিয়ে বসে পড়ব?
কুর’আন বলে,
فَقَاتِلْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ لَا تُكَلَّفُ إِلَّا نَفْسَكَ ۚ وَحَرِّضِ الْمُؤْمِنِينَ
‘‘আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করতে থাকুন, আপনি নিজের সত্তা ব্যতীত অন্য কোন বিষয়ের যিম্মাদার নন! আর আপনি মুসলমানদেরকে উৎসাহিত করতে থাকুন(জিহাদের জন্য)।’’ [সূরা আন-নিসাঃ৮৪]
#(৬৫) বল হে কুরআন! মুসলমানদের জন্য কাফিরদেরকে স্বীয় অভিভাবকরূপে গ্রহণ করা কি বৈধ?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ
‘‘হে মুমিণগণ! তোমরা ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। (কেননা) তারা একে অপরের বন্ধু।’’ [সূরা আল-মায়েদাঃ৫১]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الَّذِينَ اتَّخَذُوا دِينَكُمْ هُزُوًا وَلَعِبًا مِّنَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ وَالْكُفَّارَ أَوْلِيَاءَ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
‘‘হে মুমিনগণ, আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে যারা তোমাদের ধর্মকে উপহাস ও খেলা মনে করে, তাদেরকে এবং অন্যান্য কাফেরকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করো না। আল্লাহকে ভয় কর, যদি তোমরা ঈমানদার হও।’’ [সূরা আল-মায়েদাঃ ৫৭]
#(৬৬) বল হে কুরআন! যদি নিজেদের বাপ, ভাইদের মধ্য থেকে কেউ কাফের হয় বা ঈমানের তুলনায় কুফরকে বেশি পছন্দ করে তাহলে তাদেরকেও কি অভিভাবক রূপে গ্রহন করা যাবে না?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا آبَاءَكُمْ وَإِخْوَانَكُمْ أَوْلِيَاءَ إِنِ اسْتَحَبُّوا الْكُفْرَ عَلَى الْإِيمَانِ
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় পিতা ও ভাইদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করো না, যদি তারা ঈমান অপেক্ষা কুফরকে ভালবাসে।’’ [সূরা আত-তওবাঃ২৩]
#(৬৭) বল হে কুরআন! কাফের ব্যতীত মুসলমানদের অন্য যে সকল শত্রু আছে তাদেরকেও কি অভিভাবক বানানো যাবে না?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ
মুমিনগণ, তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধরূপে গ্রহণ করো না। [সূরা আল-মুমতাহিনাহঃ ১]
#(৬৮) বল হে কুরআন! কাফেরদেরকে নিজ অভিভাবক বানানো যাবে না তাতো বুঝলাম তাদের সাথে কি বন্দ্বুত্বও করা যাবে না?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا بِطَانَةً مِّن دُونِكُمْ لَا يَأْلُونَكُمْ خَبَالًا وَدُّوا مَا عَنِتُّمْ قَدْ بَدَتِ الْبَغْضَاءُ مِنْ أَفْوَاهِهِمْ وَمَا تُخْفِي صُدُورُهُمْ أَكْبَرُ ۚ قَدْ بَيَّنَّا لَكُمُ الْآيَاتِ ۖ إِن كُنتُمْ تَعْقِلُونَ
هَا أَنتُمْ أُولَاءِ تُحِبُّونَهُمْ وَلَا يُحِبُّونَكُمْ وَتُؤْمِنُونَ بِالْكِتَابِ كُلِّهِ وَإِذَا لَقُوكُمْ قَالُوا آمَنَّا وَإِذَا خَلَوْا عَضُّوا عَلَيْكُمُ الْأَنَامِلَ مِنَ الْغَيْظِ ۚ قُلْ مُوتُوا بِغَيْظِكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ
إِن تَمْسَسْكُمْ حَسَنَةٌ تَسُؤْهُمْ وَإِن تُصِبْكُمْ سَيِّئَةٌ يَفْرَحُوا بِهَا ۖ وَإِن تَصْبِرُوا وَتَتَّقُوا لَا يَضُرُّكُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا ۗ إِنَّ اللَّهَ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطٌ
‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না-তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও।দেখ! তোমরাই তাদের ভালবাস, কিন্তু তারা তোমাদের প্রতি মোটেও সদভাব পোষণ করে না। আর তোমরা সমস্ত কিতাবেই বিশ্বাস কর। অথচ তারা যখন তোমাদের সাথে এসে মিশে, বলে, আমরা ঈমান এনেছি। পক্ষান্তরে তারা যখন পৃথক হয়ে যায়, তখন তোমাদের উপর রোষবশতঃ আঙ্গুল কামড়াতে থাকে। বলুন, তোমরা আক্রোশে মরতে থাক। আর আল্লাহ মনের কথা ভালই জানেন।তোমাদের যদি কোন মঙ্গল হয়; তাহলে তাদের খারাপ লাগে। আর তোমাদের যদি অমঙ্গল হয় তাহলে আনন্দিত হয় আর তাতে যদি তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে তাদের প্রতারণায় তোমাদের কোনই ক্ষতি হবে না। নিশ্চয়ই তারা যা কিছু করে সে সমস্তই আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে। [সূরা আলে ইমরানঃ ১১৮-১২০]
#(৬৯) বল হে কুরআন! আজ অনেকেই তো কাফির মুশরিকদেরকে নিজেদের অভিভাবক, সংরক্ষক ও প্রান প্রয় বন্দ্বু বানিয়ে বসে আছে। নিজ দেশে তাদেরকে ডেকে এনে আদর করে আপ্যায়ন করাচ্ছে। যারা আজ মহান আল্লাহ্র নির্দেশ অমান্য করে এসব করছে তাদের ব্যপারে তোমার ফায়সালা কি?
কুর’আন বলে,
وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ
‘‘আর তোমাদের যারা তাদের অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তারা সীমালংঘনকারী।’’ [সূরা আত-তাওবাঃ২৩]
وَمَن يَتَوَلَّهُم مِّنكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
‘‘তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত।’’ [সূরা আল-মায়েদাঃ৫১]
بَشِّرِ الْمُنَافِقِينَ بِأَنَّ لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا
الَّذِينَ يَتَّخِذُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ أَيَبْتَغُونَ عِندَهُمُ الْعِزَّةَ فَإِنَّ الْعِزَّةَ لِلَّهِ جَمِيعًا
“সেসব মুনাফেককে সুসংবাদ শুনিয়ে দিন যে, তাদের জন্য নির্ধারিত রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। যারা মুসলমানদের বর্জন করে কাফেরদেরকে নিজেদের বন্ধু বানিয়ে নেয় এবং তাদেরই কাছে সম্মান প্রত্যাশা করে, অথচ যাবতীয় সম্মান শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য"। [সূরা নিসাঃ ১৩৮-১৩৯]
#(৭০) বল হে কুরআন! যারা মুসলমান নাম ধারন করে বিধর্মীদের সাথে বন্দ্বুত্ব রাখে এবং স্বজাতীর পিঠে ছুড়ি মারার জন্য সদা সুযোগের সন্দ্বানে থাকে সেই সকল মুনাফিকদের শাস্তি কি?
কুর’আন বলে,
وَعَدَ اللَّهُ الْمُنَافِقِينَ وَالْمُنَافِقَاتِ وَالْكُفَّارَ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا
‘‘ওয়াদা করেছেন আল্লাহ, মুনাফেক পুরুষ ও মুনাফেক নারীদের এবং কাফেরদের জন্যে দোযখের আগুনের-তাতে পড়ে থাকবে সর্বদা।’’ [সূরা আত-তাওবাঃ ৬৮]
#(৭১) বল হে কুরআন! জিহাদের জন্য তো অর্থ সম্পদ অতি জরুরি, অত্যাবশ্যকীয় ও অবিচ্ছেদ্য অংশ তাহলে আমাদেরকে কি নিজেদের প্রিয় সম্পদও জিহাদের জন্য দান করতে হবে?
কুর’আন বলে,
آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَأَنفِقُوا مِمَّا جَعَلَكُم مُّسْتَخْلَفِينَ فِيهِ فَالَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَأَنفَقُوا لَهُمْ أَجْرٌ كَبِيرٌ
“তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর এবং তিনি তোমাদেরকে যার উত্তরাধিকারী করেছেন, তা থেকে ব্যয় কর। অতএব, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও ব্যয় করে, তাদের জন্যে রয়েছে মহাপুরস্কার।” [সূরা আল-হাদীদঃ ৭]
#(৭২) বল হে কুরআন! যা আমরা জিহাদের কাজে ব্যয় করব, জিহাদের জন্য দান করব তার প্রতিদান আমরা আল্লাহ্র কাছে আখেরাতে পাবো তো ?
কুর’আন বলে,
وَمَا تُقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُم مِّنْ خَيْرٍ تَجِدُوهُ عِندَ اللَّهِ
‘‘তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে পাবে।’’ [সূরা আল-মুযযাম্মিলঃ ২০]
#(৭৩) বল হে কুরআন! আমাদের দান করা সম্পদের পূর্ণ প্রতিদানই কি আমদেরকে দেয়া হবে? না কিছু কম করে দেয়া হবে?
কুর’আন বলে,
وَمَا تُنفِقُوا مِن شَيْءٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لَا تُظْلَمُونَ
‘‘বস্তুতঃ যা কিছু তোমরা ব্যয় করবে আল্লাহর রাহে, তা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ফিরে পাবে এবং তোমাদের কোন হক অপূর্ণ থাকবে না।’’ [সূরা আল-আনফাল ৬০]
#(৭৪) বল হে কুরআন! যদি সেই দান একেবারে ক্ষুদ্র হয় তাহলেও?
কুর’আন বলে,
وَلَا يُنفِقُونَ نَفَقَةً صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً وَلَا يَقْطَعُونَ وَادِيًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ لِيَجْزِيَهُمُ اللَّهُ أَحْسَنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ
‘‘আর তারা অল্প-বিস্তর যা কিছু ব্যয় করে, যত প্রান্তর তারা অতিক্রম করে, তা সবই তাদের নামে লেখা হয়, যেন আল্লাহ তাদের কৃতকর্মসমূহের উত্তম বিনিময় প্রদান করেন।’’ [সূরা আত-তাওবাঃ ১২১]
#(৭৫) বল হে কুরআন! আল্লাহ্র পথে আমরা যে পরিমান দান করব আমাদেরকে কি শুদু সে পরিমান সুওয়াবই দেয়া হবে না আরো বাড়ীয়ে দেয়া হবে?
কুর’আন বলে,
مَّثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍ ۗ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
‘‘যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ।’’ [সূরা আল-বাকারাঃ ২৬১]
#(৭৬) বল হে কুরআন! দানের ক্ষেত্রে কোন ধরনের বস্তু দান করতে হবে?
কুর’আন বলে,
لَن تَنَالُوا الْبِرَّ حَتَّىٰ تُنفِقُوا مِمَّا تُحِبُّونَ ۚ وَمَا تُنفِقُوا مِن شَيْءٍ فَإِنَّ اللَّهَ بِهِ عَلِيمٌ
‘‘কস্মিণকালেও কল্যাণ লাভ করতে পারবে না, যদি তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে তোমরা ব্যয় না কর। আর তোমরা যদি কিছু ব্যয় করবে আল্লাহ তা জানেন।’’
[সূরা আলে ইমরানঃ ৯২]
#(৭৭) বল হে কুরআন! আল্লাহ্র পথে দান করে কি আল্লাহ্র নৈকট্য, রহমত এবং রাসুলের দু’আ লাভ করা যাবে?
কুর’আন বলে,
وَيَتَّخِذُ مَا يُنفِقُ قُرُبَاتٍ عِندَ اللَّهِ وَصَلَوَاتِ الرَّسُولِ ۚ أَلَا إِنَّهَا قُرْبَةٌ لَّهُمْ ۚ سَيُدْخِلُهُمُ اللَّهُ فِي رَحْمَتِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
‘‘আর তারা নিজেদের ব্যয়কে আল্লাহর নৈকট্য এবং রসূলের দোয়া লাভের উপায় বলে গণ্য করে। জেনো! তাই হল তাদের ক্ষেত্রে নৈকট্য। আল্লাহ তাদেরকে নিজের রহমতের অন্তর্ভূক্ত করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুনাময়।’’ [সূরা আত-তাওবাঃ ৯৯]
#(৭৮) বল হে কুরআন! খাঁটি মুমিন কারা? যারা দান করে তারা না যারা দান না করে কৃপণতা করে তারা?
কুর’আন বলে,
الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا لَّهُمْ دَرَجَاتٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ
“সে সমস্ত লোক যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং আমি তাদেরকে যে রুযী দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। তারাই হল সত্যিকার ঈমানদার! তাদের জন্য রয়েছে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক রুযী"। [সূরা আনফালঃ ৩-৪]
➧➤(৭৯ বল হে কুরআন! আমরা যদি আল্লাহ্র পথে সম্পদ ব্যয় করি তাহলে এর দ্বারা কি আল্লাহ্ তা’আলা আমাদের সম্পদ আরো বাড়িয়ে দিবেন? আমাদের তো মনে হয় দান করলে সম্পদ কমে যায়?
কুর’আন বলে,
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ
‘‘ইবরাহীম যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর (আমার নির্দেশিত জীহাদের পথে সম্পদ ব্যয় করো), তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও (সম্পদ জিহাদের পথে ব্যয় না করে কৃপণতা শুরু করো) তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’’ [সূরা ইবরাহীমঃ৭]➧➤(৮০) বল হে কুরআন! দান করার পর তার সওয়াব অক্ষত ও অপরিবর্তনীয় রাখতে হলে আমাদেরকে কি করতে হবে?
কুর’আন বলে,
الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ لَا يُتْبِعُونَ مَا أَنفَقُوا مَنًّا وَلَا أَذًى ۙ لَّهُمْ أَجْرُهُمْ عِندَ رَبِّهِمْ وَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
‘‘যারা স্বীয় ধন সম্পদ আল্লাহর রাস্তায়(জিহাদের কাজে) ব্যয় করে, এরপর ব্যয় করার পর সে অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না এবং কষ্টও দেয় না, তাদেরই জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে পুরস্কার এবং তাদের কোন আশংকা নেই, তারা চিন্তিতও হবে না।’’ [সূরা বাকারাঃ ২৬২]➧➤(৮১) বল হে কুরআন! যদি কেউ আল্লাহ্র পথে সম্পদ ব্যয় না করে, জিহাদের কাজে পথে অর্থ-সম্পদ দান না করে কেবল সম্পদ জমা করে রাখে তাহলে তাদের এই অপরাদধের শাস্তি কি হবে? এবং তাদের পরিণতি কেমন হবে?
কুর’আন বলে,
الَّذِي جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُ
يَحْسَبُ أَنَّ مَالَهُ أَخْلَدَهُ
كَلَّا ۖ لَيُنبَذَنَّ فِي الْحُطَمَةِ
وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْحُطَمَةُ
نَارُ اللَّهِ الْمُوقَدَةُ
الَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى الْأَفْئِدَةِ
إِنَّهَا عَلَيْهِم مُّؤْصَدَةٌ
فِي عَمَدٍ مُّمَدَّدَةٍ
‘‘(আল্লাহর পথে খরচ না করে)যে অর্থ সঞ্চিত করে ও গণনা করে সে মনে করে যে, তার অর্থ চিরকাল তার সাথে থাকবে! কখনও না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্যে। আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কি? এটা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি, যা হৃদয় পর্যন্ত পৌছবে। এতে তাদেরকে বেঁধে দেয়া হবে, লম্বা লম্বা খুঁটিতে।’’ [সূরা আল-হুমাযাহঃ ২-৯]
وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍيَوْمَ يُحْمَىٰ عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَىٰ بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ ۖ هَٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَكْنِزُونَ
‘‘আর যারা স্বর্ণ ও রূপা (অর্থাৎ ধন-সম্পদ) জমা করে রাখে এবং তা ব্যয় করে না আল্লাহর পথে, তাদের কঠোর আযাবের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন। সে দিন (কিয়ামতের দিন) জাহান্নামের আগুনে (তাদের জমা করে রাখা ধন-সম্পদ) তা উত্তপ্ত করা হবে এবং তার দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠদেশকে দগ্ধ করা হবে (সেদিন বলা হবে), এগুলো যা তোমরা নিজেদের জন্যে জমা রেখেছিলে, সুতরাং এক্ষণে আস্বাদ গ্রহণ কর জমা করে রাখার। [সূরা আত-তাওবাঃ ৩৪-৩৫]➧➤(৮২) বল হে কুরআন! আমরা যদি জিহাদ না করি তাহলে সে জন্য আমদের কোনো শাস্তির সম্মুকিন হতে হবে কি না?
কুর’আন বলে,
إِلَّا تَنفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ
‘‘যদি বের না হও, তবে আল্লাহ তোমাদের মর্মন্তুদ আযাব দেবেন এবং অপর জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন।’’ [সূরা আত-তাওবাঃ ৩৯]➧➤(৮৩) বল হে কুরআন! জিহাদ ছাড়ার কারনে আমাদের উপর যেই শাস্তি আসবে তার ধরনটা কি রকম হবে? তা কি শুধু আকখিরাতেই আসবে না কি দুনিয়াতেও আসবে?
কুর’আন বলে,
وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَصَلَوَاتٌ وَمَسَاجِدُ يُذْكَرُ فِيهَا اسْمُ اللَّهِ كَثِيرًا
আর যদি মানবজাতিকে তাদের এক দলের দ্বারা অন্য দলকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা আল্লাহ্র না থাকতো তা হলে নিশ্চয়ই বিধ্বস্ত হয়ে যেত গির্জাগুলো ও মঠগুলি ও উপাসনালয় ও মসজিদ সমূহ যেখানে আল্লাহ্র নাম প্রচুরভাবে স্মরণ করা হয়! আর আল্লাহ্ নিশ্চয়ই সাহায্য করেন তাঁকে যে তাঁকে সাহায্য করে। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ তো মহাবলীয়ান, মহাশক্তিশালী। [সূরা হজ্জঃ ৪০]
وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُم بِبَعْضٍ لَّفَسَدَتِ الْأَرْضُ
''আল্লাহ যদি একজনকে অপরজনের দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে গোটা দুনিয়া বিধ্বস্ত হয়ে যেতো।'' [সূরা বাকারাঃ২৫১]➧➤(৮৪) বল হে কুরআন! জিহাদ না করলে আমরা কি জান্নাতেও যেতে পারবোনা ?
কুর’আন বলে,
أَمْ حَسِبْتُمْ أَن تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ
‘‘তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল।’’ [সূরা আলে ইমরানঃ ১৪২]➧➤(৮৫) বল হে কুরআন! অনেকেই তো আজ নিযেদের পিতা-মাতা, ভাই বন্ধু, স্ত্রী পরিজনের মায়ায় জিহাদে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছে এদের সম্পর্কে তোমার ফায়সালা কি?
কুর’আন বলে,
قُلْ إِن كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُم مِّنَ اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّهُ بِأَمْرِهِ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ
বল,তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই তোমাদের পত্নী,তোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ,তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান-যাকে তোমরা পছন্দ কর-আল্লাহ,তাঁর রসূল ও তাঁর রাহে জেহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়,তবে অপেক্ষা কর,আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত,আর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না। [সূরা তাওবাঃ ২৪]➧➤(৮৬) বল হে কুরআন! জিহাদের কথা বললে তো অনেকেই তো অব্যাহতি চায়, বিভিন্ন ওজর দেখায় যারা এধরনের কার্যকলাপে লিপ্ত তাদের ঈমান কোন পর্যায়ের?
কুর’আন বলে,
لَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَن يُجَاهِدُوا بِأَمْوَالِهِمْ وَأَنفُسِهِمْ
‘‘আল্লাহ ও রোজ কেয়ামতের প্রতি যাদের ঈমান রয়েছে তারা মাল ও জান দ্বারা জেহাদ করা থেকে আপনার কাছে অব্যাহতি কামনা করবে না ।’’ [সূরা আত-তাওবা:৪৪]➧➤(৮৭) বল হে কুরআন! তোমার কথা থেকে বুঝতে পারলাম যে, যেই ব্যাক্তি মহান আল্লাহ্ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে সে কখন জিহাদ ফি সাবীলিল্লাহ থেকে বিরত থাকতে পারেনা এবং জিহাদ থেকে বিরত থাকা, অব্যাহতি কামনা করা এটা কোন মুমিন মুসলমানের কাজ নয়। তাহলে এই জিহাদ হতে অব্যাহতি কামানা করা জিহাদ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুমতি কামনা করা এটা কাদের কাজ?
কুর’আন বলে,
إِنَّمَا يَسْتَأْذِنُكَ الَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَارْتَابَتْ قُلُوبُهُمْ فَهُمْ فِي رَيْبِهِمْ يَتَرَدَّدُونَ
‘‘নিঃসন্দেহে তারাই আপনার কাছে অব্যাহতি চায়, যারা আল্লাহ ও রোজ কেয়ামতে ঈমান রাখে না এবং তাদের অন্তর সন্দেহগ্রস্ত হয়ে পড়েছে, সুতরাং সন্দেহের আবর্তে তারা ঘুরপাক খেয়ে চলেছে।’’ [সূরা আত-তাওবা:৪৫]➧➤(৮৮) বল হে কুরআন! তারা কি বুঝেনা যে জিহাদের অবতীর্ণ হওয়ার মাঝেই তাদের জন্য কল্যাণ আর সমৃদ্ধ আর জিহাদ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য ধ্বংস আর বরবাদী। জিহাদের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা দিবালোকের ন্যায় এমন সুস্পষ্ট হওয়ার পরও তারা জিহাদ হতে অব্যাহতি চায় কেন? জিহাদ থেকে বিরত থাকার অনুমতিই বা প্রার্থনা করে কেন?
কুর’আন বলে,
رَضُوا بِأَن يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطُبِعَ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَفْقَهُونَ
‘‘তারা পেছনে পড়ে থাকা লোকদের(ছোট ছেলে মেয়ে আর নারী) সাথে থেকে যেতে পেরে আনন্দিত হয়েছে এবং মোহর এঁটে দেয়া হয়েছে তাদের অন্তরসমূহের উপর। বস্তুতঃ তারা বোঝে না।’’ [সূরা আত-তাওবা:৮৭]➧➤(৮৯) বল হে কুরআন! যারা সত্যিকারে জিহাদের যেথে অক্ষম, জিহাদ করার মতো শক্তি-সামর্থ্য সত্যিই যাদের নেই জিহাদ তরক করার কারনে তারাও কি উক্ত আযাবে নিপতিত হব?
কুর’আন বলে,
لَّيْسَ عَلَى الْأَعْمَىٰ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْأَعْرَجِ حَرَجٌ وَلَا عَلَى الْمَرِيضِ حَرَجٌ
অন্ধের জন্যে, খঞ্জের জন্যে ও রুগ্নের জন্যে কোন অপরাধ নাই এবং যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের অনুগত্য করবে তাকে তিনি জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত হয়। পক্ষান্তরে যে, ব্যক্তি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিবেন। [সূরা ফাতহঃ ১৭]
لَّيْسَ عَلَى الضُّعَفَاءِ وَلَا عَلَى الْمَرْضَىٰ وَلَا عَلَى الَّذِينَ لَا يَجِدُونَ مَا يُنفِقُونَ حَرَجٌ
‘‘দূর্বল, রুগ্ন, ব্যয়ভার বহনে অসমর্থ লোকদের (জিহাদ ছাড়ার কারনে) জন্য কোন অপরাধ নেই।’’ [সূরা আত-তাওবা:৯১]➧➤(৯০) বল হে কুরআন! তবে কারা জিহাদ ছাড়ার করনে মহান আল্লাহর আযাব ও গযবে নিপতিত হবে? কাদের উপর মহান আল্লাহর ক্রোধ আপতিত হবে?
কুর’আন বলে,
إِنَّمَا السَّبِيلُ عَلَى الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ وَهُمْ أَغْنِيَاءُ ۚ رَضُوا بِأَن يَكُونُوا مَعَ الْخَوَالِفِ وَطَبَعَ اللَّهُ عَلَىٰ قُلُوبِهِمْ فَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
‘‘অভিযোগের পথ তো তাদের ব্যাপারে রয়েছে, যারা তোমার নিকট অব্যাহতি কামনা করে অথচ তারা সম্পদশালী। যারা পেছনে পড়ে থাকা লোকদের সাথে(ছোট ছেলে মেয়ে আর নারী) থাকতে পেরে আনন্দিত হয়েছে। আর আল্লাহ মোহর এঁটে দিয়েছেন তাদের অন্তরসমূহে। বস্তুতঃ তারা জানতেও পারেনি।’’ [সূরা আত-তাওবা:৯৩]
وَإِذَا أُنزِلَتْ سُورَةٌ أَنْ آمِنُوا بِاللَّهِ وَجَاهِدُوا مَعَ رَسُولِهِ اسْتَأْذَنَكَ أُولُو الطَّوْلِ مِنْهُمْ وَقَالُوا ذَرْنَا نَكُن مَّعَ الْقَاعِدِينَ
"আর যখন নাযিল হয় কোন সূরা যে, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর উপর, তাঁর রসূলের সাথে একাত্ন হয়ে; তখন(জিহাদের যাওয়ার ব্যাপারে) বিদায় কামনা করে তাদের সামরথ্যবন লোকেরা এবং বলে আমাদের অব্যাহতি দিন, যাতে আমরা (নিস্ক্রিয়ভাবে) বসে থাকা লোকদের সাথে থেকে যেতে পারি।" [সূরা আত-তাওবা:৮৬]➧➤(৯১) বল হে কুরআন! অনেকেই তো মনে করে যে জিহাদে গেলে মারা যাবে। তাই তারা জিহাদ থেকে পালিয়ে বাচতে চায়। এধরনের লোকদের সম্পর্কে তোমার অভিমত কি?
কুর’আন বলে,
قُل لَّن يَنفَعَكُمُ الْفِرَارُ إِن فَرَرْتُم مِّنَ الْمَوْتِ أَوِ الْقَتْلِ وَإِذًا لَّا تُمَتَّعُونَ إِلَّا قَلِيلًا
“বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে” [সূরা আহযাবঃ ১৬]
أَيْنَمَا تَكُونُوا يُدْرِككُّمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنتُمْ فِي بُرُوجٍ مُّشَيَّدَةٍ
“তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও” [সূরা নিসাঃ ৭৮]➧➤৯২) বল হে কুরআন! আমরা তো প্রতিদিনই কাফির-মশরিকদের বিশাল সমরায়জনের সংবাদ পাচ্ছি। এর ফলে মুসলমান ভয় পেয়ে জিহাদ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, আবার অনেকে জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত লোকদেরকেও ভয় দেখাচ্ছে, এমথাবস্থায় আমাদের করনীয় কি?
কুর’আন বলে,
الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ
‘‘(ঐ সমস্ত লোকদের জন্য মহা প্রতিদান) যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশদ বহু সাজ-সরঞ্জাম; তাদের ভয় কর।(কিন্তু ঐ সংবাদ শুনার পড়) তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে, আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী।’’
[সূরা আলে ইমরানঃ১৭৩]➧➤(৯৩) বল হে কুরআন! মহান আল্লাহর পথে জিহাদে যেতে যারা মানুষদের বাধা দেয় তাদের শাস্তি কি ধরনের?
কুর’আন বলে,
الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَن سَبِيلِ اللَّهِ أَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ
‘‘যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে, আল্লাহ তাদের সকল কর্ম ব্যর্থ করে দেন।’’ [সূরা মুহাম্মাদঃ১]
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَصَدُّوا عَن سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ مَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَن يَغْفِرَ اللَّهُ لَهُمْ
নিশ্চয় যারা কাফের এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে, অতঃপর কাফের অবস্থায় মারা যায়, আল্লাহ কখনই তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। [সুরা মুহাম্মাদঃ৩৪]➧➤(৯৪) বল হে কুরআন! যুদ্ধের মাধ্যমে যদি আমাদের হাতে কোন গণীমত অর্জিত হয় তাহলে তা ভক্ষন করা এবং তা ব্যবহার করা আমাদের জন্য বৈধ হবে কিনা?
কুর’আন বলে,
فَكُلُوا مِمَّا غَنِمْتُمْ حَلَالًا طَيِّبًا
“সুতরাং তোমরা খাও গনীমত হিসাবে তোমরা যে পরিচ্ছন্ন ও হালাল বস্তু অর্জন করেছ তা থেকে”। [সূরা আনফালঃ ৬৯]➧➤(৯৫) বল হে কুরআন! যুদ্ধের মধ্যমে অর্জিত গনীমত সবটাই কি আমরা ভোগ করতে পারব না এক্ষেত্রে নির্ধারিত কোন বিধান রয়েছে?
কুর’আন বলে,
وَاعْلَمُوا أَنَّمَا غَنِمْتُم مِّن شَيْءٍ فَأَنَّ لِلَّهِ خُمُسَهُ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَىٰ
“আর এ কথাও জেনে রাখ যে,কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে,তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহ ও রসূলের জন্য (আর বাকি চার ভাগ মুজাহিদদের)” [সূরা আনফালঃ ৪১]➧➤(৯৬) বল হে কুরআন! ইউরোপ-আমেরিকা, পাশ্চাত্য সভ্যতা জিহাদ কে সন্ত্রাস বলে আখ্যায়িত করে তার থেকে বিরত থাকার জন্য মুসলমানদেরকে সবক দিচ্ছে। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে অনেক মুসলমানও জিহাদে যেথে বারণ করেছে। অপরদিকে কুরআন ও হাদিছে মুসলমানদেরকে জিহাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এখন আমারা কার কথা মানব, কার নির্দেশের অনুসরণ করব?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنكُمْ
‘‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর(ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ) তাদের।’’ [সূরা নিসাঃ৫৯]➧➤(৯৭) বল হে কুরআন! এরপর যদি কখনো কোন বিষয় মতবিরোধ দেখা দেয় তাহলে আমরা সমাধানের জন্য কার কাছে যাব?
কুর’আন বলে,
فَإِن تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللَّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ
‘‘তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে(ফায়সালার ব্যাপারে) বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক।’’ [সূরা নিসাঃ ৫৯]➧➤(৯৮) বল হে কুরআন! জিহাদের সফরে পথিমধ্যে সন্দেহ যুক্ত কোন লোক পরলে তখন কি করতে হবে? তাকে কি তখন আমরা কাফির মনে করে হত্যা করতে পারব?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর, তখন(প্রতিটা বিষয়) যাচাই করে নিও এবং যে, তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। [সূরা আন-নিসাঃ৯৪]➧➤(৯৯) বল হে কুরআন! যুদ্ধের ময়দানে ভয়-ভীতি এবং আশাজনক কোন সংবাদ এলে তাকি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যাবে? না আমীরের সামনে উপস্তাপন করতে হবে?
কুর’আন বলে,
وَإِذَا جَاءَهُمْ أَمْرٌ مِّنَ الْأَمْنِ أَوِ الْخَوْفِ أَذَاعُوا بِهِ ۖ وَلَوْ رَدُّوهُ إِلَى الرَّسُولِ وَإِلَىٰ أُولِي الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِينَ يَسْتَنبِطُونَهُ مِنْهُمْ ۗ وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَتُهُ لَاتَّبَعْتُمُ الشَّيْطَانَ إِلَّا قَلِيلًا
‘‘আর যখন তাদের কছে পৌঁছে কোন সংবাদ শান্তি-সংক্রান্ত কিংবা ভয়ের, তখন তারা সেগুলোকে রটিয়ে দেয়। আর যদি সেগুলো পৌঁছে দিত রসূল পর্যন্ত কিংবা তাদের শাসকদের পর্যন্ত, তখন অনুসন্ধান করে দেখা যেত সেসব বিষয়, যা তাতে রয়েছে অনুসন্ধান করার মত। বস্তুতঃ আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা যদি তোমাদের উপর বিদ্যমান না থাকত তবে তোমাদের অল্প কতিপয় লোক ব্যতীত সবাই শয়তানের অনুসরণ করতে শুরু করত!।’’ [সূরা আন-নিসাঃ ৮৩]➧➤(১০০) বল হে কুরআন! যুদ্ধের ময়দানে সন্দেহ যুক্ত কোন ব্যাক্তি যদি কোন সংবাদ নিয়ে আসে তাহলে সে সম্পর্কে যাচাই বাছাই না করেই কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা উচিত হবে কিনা?
কুর’আন বলে,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ
“মুমিনগণ! যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোন সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।“ [সূরা আল-হুজুরাতঃ ৬]
Collection From Go