প্রশ্ন- আমি একটি লেকচারে শুনেছি, কোন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করলে, তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতে হবে, এমনকি সে তওবা করার পরেও। তাকে কি হদ্দের কারণে হত্যা করা হবে নাকি কুফরের কারণে? যদি সে আন্তরিকভাবে তওবা করে, তবে কি আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন নাকি সে এরপরও জাহান্নামে যাবে?
উত্তর- সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
প্রশ্নটির উত্তরকে আমরা দু’টি অংশে ভাগ করতে পারি।
প্রথমত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমানকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম :
আলিমগণ এই বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে একমত যে, যদি কোন মুসলিম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করে, তবে সে ব্যক্তি কাফির, মুরতাদ এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতে হবে। একাধিক ‘আলিম থেকে এই ইজমা বর্ণিত হয়েছে যেমন, ইমাম ইসহাক ইবন রাহাওয়ি, ইবন আল-মুনযির, আল-কাজি ‘ইয়াদ, আল-খাত্তাবি এবং অন্যান্য। [আল-সারিম আল-মাসলুল, ২/১৩-১৬]
কুর’আন এবং সুন্নাহ থেকেও এই হুকুমের পক্ষে দলিল পাওয়া যায়।
পবিত্র কুর’আনে বলা হচ্ছে- “মুনাফিকরা আশংকা প্রকাশ করে, তোমাদের উপর এমন কোন সূরা নাযিল হয়ে পড়ে কিনা, যা তাদের মনের সবকিছু ফাঁস করে দিবে; তুমি বলো, তোমরা বিদ্রূপ করে নাও! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু প্রকাশ করে দিবেন, যার আশংকা তোমরা করছো।
তুমি যদি তাদের প্রশ্ন করো, তারা বলবে, আমরা তো একটু অযথা কথাবার্তা ও হাসিঠাট্টা করছিলাম মাত্র। তুমি বলো, তোমরা কি তবে আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রূপ করছিলে?
তোমরা দোষ ছাড়ানোর চেষ্টা করো না, ঈমান আনার পর তোমরা পূনরায় কাফির হয়ে গেছো; … [সূরা তওবা, ৬৪-৬৬]
এই আয়াতে পরিষ্কার বলা হয়েছে আল্লাহ, তাঁর আয়াত এবং তাঁর রাসূলকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করা কুফর, সুতরাং এই বিষয়গুলো নিয়ে অপমানসূচক কথা বলা তো আরো বড় অপরাধ। এই আয়াত থেকে আরো প্রমাণ পাওয়া যায় যে, যদি কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খাটো করে, তবে সেও কাফির; চাই তা সত্যিকার অর্থেই হোক কিংবা মজা করার জন্য।
যদি আমরা সুন্নাহর দিকে তাকাই, তবে আবু দাউদ [৪৩৬২] ‘আলি থেকে একজন ইহুদি নারীর ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যে নারী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করতো এবং তাঁর নামে কটূক্তি করতো। এই কারণে এক ব্যক্তি তার শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক্ষেত্রে কোন রক্তমূল্য ধার্য করেননি।
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ আল-সারিম আল-মাসলুলে বলেছেন [১/১৬২], হাদিসটি যায়্যিদ, এবং এই হাদিসটির সমর্থনে ইবন আব্বাস থেকে বর্ণিত একটি হাদিস পাওয়া যায়, যা আমরা পরবর্তীতে তুলে ধরবো।
এই হাদিস থেকে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করার কারণে ঐ নারীকে হত্যা করা বৈধ ছিল।
আবু দাউদ [৪৩৬১] ইবন আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন যে, একজন অন্ধ ব্যক্তির অধীনে একজন দাসী (উম্মু ওয়ালাদ) ছিলো। এই মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভিশাপ দিতো এবং তাকে সাবধান করার পরও সে বিরত হতো না। এক রাতে সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভিশাপ দিতে শুরু করলে, সেই অন্ধ ব্যক্তি একটি ছুরি নিয়ে তার পেটে বিদ্ধ করলেন এবং ভিতরে চাপ দিতে লাগলেন যতক্ষণ না তার মৃত্যু হয়। সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে খবর পৌছালো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজনকে একত্রিত করে বললেন, আমি আল্লাহর নামে তোমাদের আদেশ করছি, যে কাজটি করেছো উঠে দাঁড়াও। অন্ধ ব্যক্তিটি উঠে দাঁড়ালেন এবং হেঁটে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে এসে বসে পড়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমিই সেই ব্যক্তি যে কাজটি করেছে। সে আপনাকে অভিশাপ দিতো এবং তাকে বিরত থাকার কথা বলার পরও সে বিরত হতো না। তার থেকে আমার মুক্তার মত দুটি সন্তান আছে এবং সে আমার প্রতি খুব সদয় ছিলো। কিন্তু গত রাতে সে আপনাকে অভিশাপ দিতে লাগলো। তাই আমি একটি ছুরি নিয়ে তার পেটে ঢুকিয়ে দিলাম এবং মৃত্যু না পর্যন্ত তা চেপে ধরে রাখলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, জেনে রেখো, তার জন্য কোন রক্তমূল্য নেই”। [আলবানি-সাহিহ আবু দাউদ, ৩৬৫৫]
হাদিসের বর্ণনা শুনে মনে হয়, এই মহিলা সম্ভবত কাফির ছিল, মুসলিম নয়। কারণ কোন মুসলিমের পক্ষে এ ধরনের হীন কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি সে মুসলিমও হতো, এই কাজের কারণে সে মুরতাদ হয়ে যেতো এবং তার মালিকের জন্য তাকে রাখা আর বৈধ হতো না। এবং সেক্ষেত্রে তার মালিকের জন্য তাকে নিজের কাছে রেখে শুধুমাত্র সাবধান করাই যথেষ্ট বলে গণ্য হতো না।
আন-নাসাঈ [৪০৭১] আবু বারযাহ আল-আসলামি থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি আবু বাকর আস-সিদ্দিকের সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বললে আমি বললাম, আমি কি তাকে হত্যা করবো? তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন এবং বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর আর কারো জন্য তা প্রযোজ্য নয়। [সাহিহ আন-নাসাঈ, ৩৭৯৫]
এই বর্ণনা থেকে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই অধিকার ছিল যে, কেউ তাঁকে অপমান করলে কিংবা তাঁর সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বললে তিনি তাকে হত্যা করতে পারতেন, সে কাফির হোক কিংবা মুসলিম।
দ্বিতীয়ত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমানকারী ব্যক্তি যদি তওবা করে, তবে তার তওবা কবুল হবে কি হবে না :
আলিমগণ একমত যে, যদি এ ধরনের কোন ব্যক্তি আন্তরিকভাবে তওবা করে এবং তার কাজের জন্য লজ্জিত হয়, তবে কিয়ামতের দিন তা তার জন্য লাভজনক হবে এবং আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু এই পৃথিবীতে তার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে কিনা এবং তার শাস্তি রহিত হবে কিনা, এই বিষয়ে ‘আলিমগণ ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
ইমাম মালিক এবং আহমাদের মতে তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং তওবা করার পরও তাকে হত্যা করতে হবে। তারা নিচের হাদিসসমূহ দলিলস্বরূপ পেশ করেছেন-
আবু দাউদ [২৬৮৩] থেকে বর্ণিত, সা’দ ইবন আবি ওয়াক্কাস বলেছেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবার জন্য নিরাপত্তার ঘোষণা দিয়েছিলেন, চার জন পুরুষ এবং দুইজন মহিলা ব্যতীত; এরপর তিনি তাদের নাম বললেন… এবং ইবন আবি সারহ। আর ইবন আবি সারহ, উসমান ইবন আফফানের সাথে লুকিয়ে ছিলো। যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদের বাইয়াতের জন্য ডাকলেন, তিনি (উসমান) তাকে সাথে করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে হাজির হলেন এবং বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আব্দুল্লাহর বাইয়াত গ্রহণ করুন”। তিনি তিনবার তাঁর মাথা উঠালেন এবং তার দিকে তাকিয়ে বাইয়াত গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালেন। তৃতীয়বারে তিনি বাইয়াত গ্রহণ করলেন। তারপর তিনি তাঁর সাহাবীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “যখন আমি তাকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিতে এবং বাইয়াত গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালাম, তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলো না, যে এই লোককে হত্যা করতে পারতে?” তারা বললো, “হে আল্লাহর রাসূল, আপনার অন্তরে কী আছে তা আমরা বুঝতে পারিনি। আপনি কেন আমাদের চোখ দিয়ে ইশারা করলেন না?” তিনি জবাব দিলেন, “চোখ দিয়ে ইশারার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে ধোঁকা দেয়া একজন নবীর জন্য শোভনীয় নয়”। [সাহিহ আবু দাউদ, ২৩৩৪]
এই হাদিস থেকে এটি সুস্পষ্ট যে, এখানে যে মুরতাদ ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, এমন ব্যক্তির তওবা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক নয়, বরং সে তওবা করার পরও তাকে হত্যা করা বৈধ।
আবদুল্লাহ ইবন সা’দ ছিলেন একজন ওহী লেখক, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি মুরতাদ হয়ে যান এবং দাবি করেন যে, তিনি লেখার সময় ওহীর সাথে তার ইচ্ছামত কথা জুড়ে দিতেন। এটি ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি মিথ্যা আরোপ এবং এক ধরনের অবমাননা। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি আবার মুসলিম হয়ে যান এবং অত্যন্ত ভালো মুসলিম ছিলেন, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন। [আল-সারিম, ১১৫]
এই হাদিসটির সঠিক ব্যাখ্যা হলো-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি কোন অবমাননার ক্ষেত্রে দু’ধরনের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়; আল্লাহর অধিকার এবং বান্দার অধিকার। আল্লাহর অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সুস্পষ্ট; কারণ এক্ষেত্রে তাঁর আয়াত, তাঁর কিতাব এবং তাঁর নাযিলকৃত ধর্মের উপর নিন্দা আরোপ করা হচ্ছে। আর বান্দার অধিকারের বিষয়টিও সুস্পষ্ট; কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করা, তাঁর উপর মিথ্যা আরোপ করার শামিল। যেক্ষেত্রে আল্লাহর হক্ব এবং বান্দার হক্ব উভয়ই জড়িত থাকে, সেক্ষেত্রে অপরাধী ব্যক্তি তওবা করলেই বান্দার হক্ব লঙ্ঘনের শাস্তি মাফ হয়ে যায় না। উদাহরণস্বরূপ, ডাকাতি করার শাস্তির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে, যদি একজন দস্যু কোন মানুষকে খুন করে, তবে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু যদি সে দস্যু ধরা পড়ার আগেই তওবা করে, তাহলে আল্লাহর যে হক্ব অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড আর কার্যকরী নয়। কিন্তু অন্যান্য মানুষের যে হক্ব অর্থাৎ ক্বিসাসের হুকুম তখনও কার্যকরী থাকে। এক্ষেত্রেও ঠিক একই ধরনের হুকুম প্রযোজ্য। যদি কোন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করার পর তওবা করে, তবে আল্লাহর হক্ব লঙ্ঘনের বিষয়টি আর উপস্থিত নয় কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হক্ব লঙ্ঘনের বিষয়টি তার তওবা করার পরও নিষ্পত্তি হয়ে যায়নি।
যদি কেউ বলে, “আমরা কি তাকে ক্ষমা করে দিতে পারি না? কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় তো অনেককে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন”। এই কথার জবাব হলো-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উদ্দেশ্যে কটূক্তিকারীদের কাউকে কখনও ক্ষমা করে দিয়েছেন আবার কখনও করেননি। কিন্তু এখন তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর ক্ষমা করার বিষয়টি আর জেনে নেয়া সম্ভব নয় এবং অন্যদিকে এই মৃত্যুদণ্ড আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের হক্ব হিসেবে বিদ্যমান। তাই এই শাস্তি অবশ্যই কার্যকর করতে হবে। [আল-সারিম আল-মাসলুল, ২/৪৩৮]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করা হারাম কাজসমূহের মাঝে একটি নিকৃষ্টতম কাজ এবং ‘আলিমগণের ইজমা রয়েছে যে, এটি এমন কুফর যা একজনকে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের করে দেয়, তা সে উদ্দেশ্যকৃতভাবেই করুক কিংবা ঠাট্টাচ্ছলে। সে ব্যক্তি মুসলিমই হোক আর কাফির, সে তওবা করার পরও তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতে হবে। যদি সে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে তওবা করে এবং তার কাজের জন্য লজ্জিত হয়, তবে কিয়ামতের দিন তা তার জন্য লাভজনক হবে এবং আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন।
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ এই বিষয়ে অত্যন্ত মূল্যবান একটি বই লিখেছেন, যার নাম ‘আল-সারিম আল-মাসলুল ‘আলা শাতিম আর-রাসূল’। এই বইটি প্রত্যেক মুমিনের পড়া উচিত; বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে যখন মুনাফিক আর নাস্তিকের দ্ল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। কারণ তারা দেখতে পাচ্ছে, মুসলিমরা আজ ভাবলেশহীন এবং নিজেদের ধর্ম আর রাসূলের প্রতি যে গিরাহ, তা তারা হারিয়ে ফেলেছে। এবং মুসলিমরা আজ শার’ঈ শাস্তি বাস্তবায়ন করছে না, যা এই সকল লোকেদের এই ধরনের সুস্পষ্ট কুফরী কাজের পুনরাবৃত্তি করা থেকে বিরত রাখতো।
আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। সাল্লাল্লাহু ‘আলা সায়্যিদিনা মুহাম্মাদ ওয়া ‘আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি ওয়াসাল্লাম।
উত্তর- সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
প্রশ্নটির উত্তরকে আমরা দু’টি অংশে ভাগ করতে পারি।
প্রথমত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমানকারী ব্যক্তির ক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম :
আলিমগণ এই বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে একমত যে, যদি কোন মুসলিম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করে, তবে সে ব্যক্তি কাফির, মুরতাদ এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতে হবে। একাধিক ‘আলিম থেকে এই ইজমা বর্ণিত হয়েছে যেমন, ইমাম ইসহাক ইবন রাহাওয়ি, ইবন আল-মুনযির, আল-কাজি ‘ইয়াদ, আল-খাত্তাবি এবং অন্যান্য। [আল-সারিম আল-মাসলুল, ২/১৩-১৬]
কুর’আন এবং সুন্নাহ থেকেও এই হুকুমের পক্ষে দলিল পাওয়া যায়।
পবিত্র কুর’আনে বলা হচ্ছে- “মুনাফিকরা আশংকা প্রকাশ করে, তোমাদের উপর এমন কোন সূরা নাযিল হয়ে পড়ে কিনা, যা তাদের মনের সবকিছু ফাঁস করে দিবে; তুমি বলো, তোমরা বিদ্রূপ করে নাও! নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু প্রকাশ করে দিবেন, যার আশংকা তোমরা করছো।
তুমি যদি তাদের প্রশ্ন করো, তারা বলবে, আমরা তো একটু অযথা কথাবার্তা ও হাসিঠাট্টা করছিলাম মাত্র। তুমি বলো, তোমরা কি তবে আল্লাহ, তাঁর আয়াতসমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রূপ করছিলে?
তোমরা দোষ ছাড়ানোর চেষ্টা করো না, ঈমান আনার পর তোমরা পূনরায় কাফির হয়ে গেছো; … [সূরা তওবা, ৬৪-৬৬]
এই আয়াতে পরিষ্কার বলা হয়েছে আল্লাহ, তাঁর আয়াত এবং তাঁর রাসূলকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করা কুফর, সুতরাং এই বিষয়গুলো নিয়ে অপমানসূচক কথা বলা তো আরো বড় অপরাধ। এই আয়াত থেকে আরো প্রমাণ পাওয়া যায় যে, যদি কেউ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খাটো করে, তবে সেও কাফির; চাই তা সত্যিকার অর্থেই হোক কিংবা মজা করার জন্য।
যদি আমরা সুন্নাহর দিকে তাকাই, তবে আবু দাউদ [৪৩৬২] ‘আলি থেকে একজন ইহুদি নারীর ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যে নারী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করতো এবং তাঁর নামে কটূক্তি করতো। এই কারণে এক ব্যক্তি তার শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক্ষেত্রে কোন রক্তমূল্য ধার্য করেননি।
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ আল-সারিম আল-মাসলুলে বলেছেন [১/১৬২], হাদিসটি যায়্যিদ, এবং এই হাদিসটির সমর্থনে ইবন আব্বাস থেকে বর্ণিত একটি হাদিস পাওয়া যায়, যা আমরা পরবর্তীতে তুলে ধরবো।
এই হাদিস থেকে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করার কারণে ঐ নারীকে হত্যা করা বৈধ ছিল।
আবু দাউদ [৪৩৬১] ইবন আব্বাস থেকে বর্ণনা করেন যে, একজন অন্ধ ব্যক্তির অধীনে একজন দাসী (উম্মু ওয়ালাদ) ছিলো। এই মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভিশাপ দিতো এবং তাকে সাবধান করার পরও সে বিরত হতো না। এক রাতে সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অভিশাপ দিতে শুরু করলে, সেই অন্ধ ব্যক্তি একটি ছুরি নিয়ে তার পেটে বিদ্ধ করলেন এবং ভিতরে চাপ দিতে লাগলেন যতক্ষণ না তার মৃত্যু হয়। সকালে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে খবর পৌছালো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকজনকে একত্রিত করে বললেন, আমি আল্লাহর নামে তোমাদের আদেশ করছি, যে কাজটি করেছো উঠে দাঁড়াও। অন্ধ ব্যক্তিটি উঠে দাঁড়ালেন এবং হেঁটে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে এসে বসে পড়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমিই সেই ব্যক্তি যে কাজটি করেছে। সে আপনাকে অভিশাপ দিতো এবং তাকে বিরত থাকার কথা বলার পরও সে বিরত হতো না। তার থেকে আমার মুক্তার মত দুটি সন্তান আছে এবং সে আমার প্রতি খুব সদয় ছিলো। কিন্তু গত রাতে সে আপনাকে অভিশাপ দিতে লাগলো। তাই আমি একটি ছুরি নিয়ে তার পেটে ঢুকিয়ে দিলাম এবং মৃত্যু না পর্যন্ত তা চেপে ধরে রাখলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, জেনে রেখো, তার জন্য কোন রক্তমূল্য নেই”। [আলবানি-সাহিহ আবু দাউদ, ৩৬৫৫]
হাদিসের বর্ণনা শুনে মনে হয়, এই মহিলা সম্ভবত কাফির ছিল, মুসলিম নয়। কারণ কোন মুসলিমের পক্ষে এ ধরনের হীন কাজ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি সে মুসলিমও হতো, এই কাজের কারণে সে মুরতাদ হয়ে যেতো এবং তার মালিকের জন্য তাকে রাখা আর বৈধ হতো না। এবং সেক্ষেত্রে তার মালিকের জন্য তাকে নিজের কাছে রেখে শুধুমাত্র সাবধান করাই যথেষ্ট বলে গণ্য হতো না।
আন-নাসাঈ [৪০৭১] আবু বারযাহ আল-আসলামি থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি আবু বাকর আস-সিদ্দিকের সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বললে আমি বললাম, আমি কি তাকে হত্যা করবো? তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন এবং বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর আর কারো জন্য তা প্রযোজ্য নয়। [সাহিহ আন-নাসাঈ, ৩৭৯৫]
এই বর্ণনা থেকে বুঝা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই অধিকার ছিল যে, কেউ তাঁকে অপমান করলে কিংবা তাঁর সাথে কর্কশ ভাষায় কথা বললে তিনি তাকে হত্যা করতে পারতেন, সে কাফির হোক কিংবা মুসলিম।
দ্বিতীয়ত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমানকারী ব্যক্তি যদি তওবা করে, তবে তার তওবা কবুল হবে কি হবে না :
আলিমগণ একমত যে, যদি এ ধরনের কোন ব্যক্তি আন্তরিকভাবে তওবা করে এবং তার কাজের জন্য লজ্জিত হয়, তবে কিয়ামতের দিন তা তার জন্য লাভজনক হবে এবং আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু এই পৃথিবীতে তার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে কিনা এবং তার শাস্তি রহিত হবে কিনা, এই বিষয়ে ‘আলিমগণ ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
ইমাম মালিক এবং আহমাদের মতে তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং তওবা করার পরও তাকে হত্যা করতে হবে। তারা নিচের হাদিসসমূহ দলিলস্বরূপ পেশ করেছেন-
আবু দাউদ [২৬৮৩] থেকে বর্ণিত, সা’দ ইবন আবি ওয়াক্কাস বলেছেন, মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবার জন্য নিরাপত্তার ঘোষণা দিয়েছিলেন, চার জন পুরুষ এবং দুইজন মহিলা ব্যতীত; এরপর তিনি তাদের নাম বললেন… এবং ইবন আবি সারহ। আর ইবন আবি সারহ, উসমান ইবন আফফানের সাথে লুকিয়ে ছিলো। যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকেদের বাইয়াতের জন্য ডাকলেন, তিনি (উসমান) তাকে সাথে করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে হাজির হলেন এবং বললেন, “হে আল্লাহর রাসূল! আব্দুল্লাহর বাইয়াত গ্রহণ করুন”। তিনি তিনবার তাঁর মাথা উঠালেন এবং তার দিকে তাকিয়ে বাইয়াত গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালেন। তৃতীয়বারে তিনি বাইয়াত গ্রহণ করলেন। তারপর তিনি তাঁর সাহাবীদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “যখন আমি তাকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিতে এবং বাইয়াত গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালাম, তোমাদের মধ্যে কি এমন কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি ছিলো না, যে এই লোককে হত্যা করতে পারতে?” তারা বললো, “হে আল্লাহর রাসূল, আপনার অন্তরে কী আছে তা আমরা বুঝতে পারিনি। আপনি কেন আমাদের চোখ দিয়ে ইশারা করলেন না?” তিনি জবাব দিলেন, “চোখ দিয়ে ইশারার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে ধোঁকা দেয়া একজন নবীর জন্য শোভনীয় নয়”। [সাহিহ আবু দাউদ, ২৩৩৪]
এই হাদিস থেকে এটি সুস্পষ্ট যে, এখানে যে মুরতাদ ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, এমন ব্যক্তির তওবা গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক নয়, বরং সে তওবা করার পরও তাকে হত্যা করা বৈধ।
আবদুল্লাহ ইবন সা’দ ছিলেন একজন ওহী লেখক, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি মুরতাদ হয়ে যান এবং দাবি করেন যে, তিনি লেখার সময় ওহীর সাথে তার ইচ্ছামত কথা জুড়ে দিতেন। এটি ছিল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি মিথ্যা আরোপ এবং এক ধরনের অবমাননা। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি আবার মুসলিম হয়ে যান এবং অত্যন্ত ভালো মুসলিম ছিলেন, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন। [আল-সারিম, ১১৫]
এই হাদিসটির সঠিক ব্যাখ্যা হলো-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি কোন অবমাননার ক্ষেত্রে দু’ধরনের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়; আল্লাহর অধিকার এবং বান্দার অধিকার। আল্লাহর অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সুস্পষ্ট; কারণ এক্ষেত্রে তাঁর আয়াত, তাঁর কিতাব এবং তাঁর নাযিলকৃত ধর্মের উপর নিন্দা আরোপ করা হচ্ছে। আর বান্দার অধিকারের বিষয়টিও সুস্পষ্ট; কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করা, তাঁর উপর মিথ্যা আরোপ করার শামিল। যেক্ষেত্রে আল্লাহর হক্ব এবং বান্দার হক্ব উভয়ই জড়িত থাকে, সেক্ষেত্রে অপরাধী ব্যক্তি তওবা করলেই বান্দার হক্ব লঙ্ঘনের শাস্তি মাফ হয়ে যায় না। উদাহরণস্বরূপ, ডাকাতি করার শাস্তির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে, যদি একজন দস্যু কোন মানুষকে খুন করে, তবে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু যদি সে দস্যু ধরা পড়ার আগেই তওবা করে, তাহলে আল্লাহর যে হক্ব অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড আর কার্যকরী নয়। কিন্তু অন্যান্য মানুষের যে হক্ব অর্থাৎ ক্বিসাসের হুকুম তখনও কার্যকরী থাকে। এক্ষেত্রেও ঠিক একই ধরনের হুকুম প্রযোজ্য। যদি কোন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করার পর তওবা করে, তবে আল্লাহর হক্ব লঙ্ঘনের বিষয়টি আর উপস্থিত নয় কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হক্ব লঙ্ঘনের বিষয়টি তার তওবা করার পরও নিষ্পত্তি হয়ে যায়নি।
যদি কেউ বলে, “আমরা কি তাকে ক্ষমা করে দিতে পারি না? কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় তো অনেককে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন”। এই কথার জবাব হলো-
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উদ্দেশ্যে কটূক্তিকারীদের কাউকে কখনও ক্ষমা করে দিয়েছেন আবার কখনও করেননি। কিন্তু এখন তাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর ক্ষমা করার বিষয়টি আর জেনে নেয়া সম্ভব নয় এবং অন্যদিকে এই মৃত্যুদণ্ড আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও মুমিনদের হক্ব হিসেবে বিদ্যমান। তাই এই শাস্তি অবশ্যই কার্যকর করতে হবে। [আল-সারিম আল-মাসলুল, ২/৪৩৮]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অপমান করা হারাম কাজসমূহের মাঝে একটি নিকৃষ্টতম কাজ এবং ‘আলিমগণের ইজমা রয়েছে যে, এটি এমন কুফর যা একজনকে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের করে দেয়, তা সে উদ্দেশ্যকৃতভাবেই করুক কিংবা ঠাট্টাচ্ছলে। সে ব্যক্তি মুসলিমই হোক আর কাফির, সে তওবা করার পরও তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করতে হবে। যদি সে ব্যক্তি আন্তরিকভাবে তওবা করে এবং তার কাজের জন্য লজ্জিত হয়, তবে কিয়ামতের দিন তা তার জন্য লাভজনক হবে এবং আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন।
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ এই বিষয়ে অত্যন্ত মূল্যবান একটি বই লিখেছেন, যার নাম ‘আল-সারিম আল-মাসলুল ‘আলা শাতিম আর-রাসূল’। এই বইটি প্রত্যেক মুমিনের পড়া উচিত; বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে যখন মুনাফিক আর নাস্তিকের দ্ল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে কটূক্তি করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। কারণ তারা দেখতে পাচ্ছে, মুসলিমরা আজ ভাবলেশহীন এবং নিজেদের ধর্ম আর রাসূলের প্রতি যে গিরাহ, তা তারা হারিয়ে ফেলেছে। এবং মুসলিমরা আজ শার’ঈ শাস্তি বাস্তবায়ন করছে না, যা এই সকল লোকেদের এই ধরনের সুস্পষ্ট কুফরী কাজের পুনরাবৃত্তি করা থেকে বিরত রাখতো।
আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। সাল্লাল্লাহু ‘আলা সায়্যিদিনা মুহাম্মাদ ওয়া ‘আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি ওয়াসাল্লাম।
শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ