হিন্দু তোষণ, মুসলিম নিধন

বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি মানে হচ্ছে হিন্দু তোষণ, মুসলিম নিধন। সাধারণত আমরা দেখি, কোন হিন্দু বাতাদের প্রতিষ্ঠানে হামলা হলে শাহবাগীসহ সকল বাম মিডিয়া লাফিয়ে কাঁইন্দা উঠে, কিন্তু গত দুই দিনে যে এত বড় ঘটনা ঘটেগেল দেখলাম না, কোন শাহবাগী, কোন মিডিয়াকে প্রতিবাদ বিবৃতি দিতে, বরং তারা সবাই জোট বেঁধেছে সংবাদটা তান্ডব হিসেবে ছাপিয়ে যেতে।
এই হল তাদের অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির নমুনা, এটি হল ইন্ডিয়ান ধারার সাম্প্রদায়িকতা, কারণ ইন্ডিয়াতে কোন মুসলিম নিধন হলে, বা তাদের সম্পদে হামলা হলে সকল মিডিয়া এটাকে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে। বাংলাদেশের মিডিয়াও তাই করছে। কারণ এইসব অসাম্প্রদায়িক মিডিয়া বলুন আর রাজনীতিক বলুন এরা সবাই আদতে ইন্ডিয়াপন্থী।
ব্রাহ্মনবাড়িয়ার এএসপি তাপস রঞ্জন বোস ও সদর থানার ওসি আকুল চন্দ্ররাই আমাদের দেশ শাসন করছে!!

বৃটিশ আমলের গল্প শুনেছি মুরব্বিদের কাছে। হিন্দু জমিদার, আর যোদদার, মারোয়ারি ব্যবসায়ীরা শাসন, শোষন আর নির্যাতন করত এদেশের মুসলাম সংখ্যাগরীষ্ঠ লোকদের। হিন্দু জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে জুতা পায়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল মুসলমানদের।
মাথার ওপর ছাতা ওপেন করে হিন্দু জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে যেতে পারতো না মুসলমানরা। হিন্দুদের বাড়িতে গেলে মুসলমানদের চেয়ারে বসতে দেয়া হতো না। মুসলমানরা হিন্দু বাড়িতে গেলে মাঠিতে বসতে হতো।

শুধু তাই নয়, হিন্দুদের কোন খাবার পাত্রে মুসলমানের স্পর্শ লাগলে তা ফেলে দেয়া হতো। কারন মুসলমানদের তারা অচ্যুত মনে করতো। ইংরেজদের সাথে মিলে হিন্দু জামিদাররা এভাবেই মুসলমানদের নির্যাতন আর শোষন করতো। এই শোষণ, নির্যাতন আর বঞ্চনা থেকে রেহাই পেতেই স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম লীগ নামক রাজনৈতিক দলের জন্ম দিয়েছিলেন। শেরেবাংলা একে ফজলুল হক কৃষক প্রজাদের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তাদের লড়াই আর সংগ্রামের ফসল ছিল পূর্বপাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশ।

খ্যাগরীষ্ঠ মুসলমানরা ১৯৪৭ সালে বৃটিশ শাসন থেকে পূর্ব পাকিস্তান হিসাবে স্বাধীনতা লাভের চেস্টা চালিয়েছিল মুসলিম লীগের নেতৃত্বে। আর পাকিস্তানিদের শোষণ বঞ্চনা থেকে রেহাই পেতে আবারো অস্ত্র হাতে স্বাধীনতা যুদ্ধ করতে হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা সার্বভৌম স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছিলাম।

শহীদ সৈয়দ আহমদ বেরলভী, শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভীর মত ওলামায়ে কেরামের নেতৃত্বেই ইংরেজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার আন্দোলন শুরু হয়েছিল। দেওবন্দ মাদ্রাসা ছিল ইংরেজ শাসন বিরোধী আন্দোলনের অগ্রভাগে। জী শরিয়তুল্লাহ, শহীদ নেসার আলী তিতুমীর, খান জাহান আলীদের সংগ্রাম আর লড়াইয়ের ধারাবাহিকতায়ই আমাদের আজকের স্বাধীনতা।
আলেম সমাজ হলো ইংরেজ শাসন থেকে স্বাধীনতা পূনরুদ্ধার সংগ্রামের প্রতীক। অথচ এই মাদ্রাসায় প্রবেশ করেই হাফেজ মাসুদকে হত্যা করলো তাপস রঞ্জন আর অনুকুল চন্দ্ররা।

কিন্তু আবারো আমাদের সার্বভৌমত্ব হরণ করেছে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ইন্ডিয়া। তাই তাপস রঞ্জন আর আকুল চন্দ্ররা এখন মাদ্রাসা ছাত্রকে পিটিয়ে এবং গুলি করে হত্যার সাহস পায়। শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এএসপি তাপস রঞ্চন, সদর থানার ওসি আকুল চন্দ্র নয়, সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি হলেন সুরেন্দ্র, ৬৪ জেলার দায়রা আদালতের বেশিরভাগ বিচারক হলেন হিন্দু, আগে জাতীয় নিরপতা গোয়েন্দা সংস্থায় (এনএসআই) কোন হিন্দু নিয়োগ দেয়া হতো না, কিন্তু এখানেও এখন হিন্দুদের প্রাধান্য, সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ন জায়গা গুলোতে হিন্দু কর্মকর্তা।

আমার এই লেখা পড়ে কেউ মনে করবেন না আমি সম্প্রদায়িকতার ধোয়া তুলছি। শুধু আমাদের দৈন্যতার কথা বলছি এবং বৃটিশ আমলের হিন্দু জমিদারদের নির্যতানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি। পূর্ব পাকিস্তান হিসাবে আমরা শুধু মুসলিম সংখ্যা গরীষ্ঠ হিসাবে স্বাধীনতা পাইনি। হিন্দু জমিদারদের নির্যাতন, শোষন, বঞ্চনা থেকে রেহাই পেতেই আমাদের এই স্বাধীনতা অর্জনের দরকার হয়েছিল।


বাংলাদেশের মুসলিমরা কি তাহলে সরকারের হিন্দু পুলিশ ও হিন্দু প্রশাসন গড়ার পরিনীতি ভোগ করতে যাচ্ছে??
গতকাল এক হিন্দু পুরোহিত মন্দিরে বসেই পবিত্র কোরআন পুড়াল।
আরেক দল হিন্দু পুলিশ ইসলামিক শিক্ষা কেন্দ্র মাদ্রাসায় গিয়ে গুলি করে হাফেজ হত্যা করল।
পাল্টা ব্যবস্তা হিসেবে এদের কিছুই করা হল না, বরং নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হলা। তাহলে কি সামনে বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য এই হিন্দু পুলিশ ও প্রশাসন দ্বারা আরো ভয়ংকর কিছু অপেক্ষা করছে???
আপনারা অবগত আছেন যে, শেখ হাসিনা পুরো প্রশাসনে হিন্দু লোক বসিয়েছে
মনে আছে ? স্বঘোষিত নাস্তিক,খোদাদ্রোহী থাবা বাবা খুন হওয়ার পর শাহবাগীরা চেতনার বিলাপ শুরু করেছিল !! মিডিয়ায় মানবতার ভূমিকম্পন হয়েছিল !! হাসিনা কেঁদে বুক ভাসিয়েছিল, সংসদে আলোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল !!
অনুরুপ,হাফেজ মাসুদ যদি আমাদের অন্তরে জাগরণ সৃষ্টি করতে না পারে বুঝতে হবে ঈমান দুর্বল হয়ে পড়েছে।... তিনি একজন হাফেজ কোরান। পবিত্র কোরআন সে তাঁর বুকে ধারণ করে ঘুরে বেড়াতো। সেই বুক ঝাঁজরা করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীর গুলি।
গুলিবিদ্ব মাসুদ ভাইয়ের শরীর দেখে হৃদয় বার-বার কেঁপে উঠছে। শহীদের লাশ দেখে মনে হচ্ছিল,প্রশান্তিতে ঘুমাচ্ছেন !! কি ছিল তাঁর অপরাধ ?
বিদায় মাসুদ ভাই। 'বিদায়! একি কলরব ধ্বনিছে বাতাসে, ক্রন্দন ভরা অক্ষিপট,ভাসাইছে সবাই ঝর্ণার ধারা, অধর পুষ্প নাহি ফুটে আজ,মুখে সবার বিষণ্নতা। তোমার বিদায়, হে শহীদ মাসুদ ভাই।
শহীদ মাসুদের রক্ত যেন সব ইসলামী দলকে ঐক্যের মঞ্চে টানে এই হোক প্রার্থনা এবং আজকের শপথ ।
মহান আল্লাহ তাকে শহীদের সর্বোচ্চ মর্যদায় কবুল করুন। আমীন।